সোমবার ● ২০ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি
সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি
হাফিজুল ইসলাম লস্কর,সিলেট প্রতিনিধি :: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ- বিয়ানীবাজার) আসনে কে হচ্ছেন নৌকার কান্ডারী। এই নিয়ে চলছে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ দলীয় মনোয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর পাশাপাশি আওয়ামীলীগের দলীয় মনোয়ন সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন আরো ৮ জন নেতা। তারা হলেন, কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর কাদির শাফি এলিম, বিয়ানীবাজার পৌরসভার মেয়র আবুল কাশেম পল্লব, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুল ইউনুস জায়গীরদার, আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন, যুক্তরাজ্য প্রবাসী নেতা আফসার খান সাদেক ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী।
এদিকে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও এলাকায় উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ ও নির্বাচনী মাঠে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান সাংসদ নুরুল ইসলাম নাহিদ।
এদিকে মনোনয়ন প্রাপ্তির শতভাগ আশা ব্যক্ত করে কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হোসেন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের জনসাধারণের পাশে রয়েছি। আমি জনপ্রতিনিধি না হয়েও এ আসনে ব্যপক উন্নয়ন করেছি। বিগত করোনা মহামারীর সময় ও বন্যার সময় আমি অসহায় মানুষের পাশে ছিলাম, আছি আগামীতেও থাকবো। আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মূল্যায়ন করবেন।
এদিকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর ব্যারিস্টার আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরে জননেত্রী শেখ হাসিনার যে অঙ্গীকার সেটা বাস্তবায়ন করতে পারে সৎ, যোগ্য এবং জনসম্পৃক্ত দক্ষ জনপ্রতিনিধি। শিক্ষা, অবকাঠামোসহ বিবিধ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে নেওয়া আমাদের দায়িত্বের অংশ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেন তাহলে গোলাপগঞ্জ- বিয়ানীবাজারকে আমি স্মার্ট এলাকা গড়ে তোলার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে চাই।
মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শেষে গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু সাংবাদিকদের বলেন, ‘তৃণমূল থেকে আমার বেড়ে ওঠা। ১/১১ এ দলের স্বার্থে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে দীর্ঘ ৯মাস কারাবরণ করেছি। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে হামলা-মামলাও হয়েছে। দলের দুর্দিনেও ছিলাম, এখনও আছি এবং আমৃত্যু দেশ ও দলের কল্যাণে থাকব ইনশাল্লাহ। আমার মমতাময়ী প্রিয় নেত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিগত দিনেও আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন তার জন্য আমি চিরকৃতজ্ঞ’। ‘দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেয়ে মনোনীত হলে বঙ্গবন্ধুকন্যার নির্দেশনায় আমার এলাকার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে জননেত্রী শেখ হাসিনার ক্ষুদ্র কমী হিসেবে কাজ করতে চাই। এলাকায় আমার জনপ্রিয়তার কারণে বিগত দিনে বহু অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র শিকার হয়েছি। আশা করি আমার নেত্রী সব খোঁজ নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌছাবেন। এতটুকু বলতে পারি যে, আমি মনোনয়ন পেলে যত প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হোক না কেন, জনগণ আমাকে বিজয়ী করবে।’ তবে ‘যদি দল আমাকে মনোনয়ন নাও দেয়-তবে নেত্রী যাকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করবেন আমি তাঁর পক্ষেই কাজ করবো।’
আওয়ামীলীগের ঘাটি হিসেবে খ্যাত সিলেট-৬ আসনে প্রত্যেক প্রার্থী মনোয়ন নিশ্চিত করতে প্রচারণা চালিয়ে গেলেও অনেক কর্মী সমর্থক মনে করছেন বিগত নির্বাচনের ন্যায় এবারও আওয়ামীলীগের মনোয়ন পাবেন বর্তমান সাংসদ নুরুল ইসলাম নাহিদ। আবার আওয়ামীলীগের অনেক কর্মী সমর্থক মনে করেন এবার নতুন কাউকে নেত্রী মনোয়ন দেবেন। তবে দ্বিধাবিভক্ত আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা পৃথক পৃথকভাবে নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে অনলাইনে অফলাইনে গনসংযোগ চালিয়ে যাওয়াতে ভোটারদের মধ্যে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তাই ভোটারদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তবে কে পাচ্ছেন আওয়ামীলীগের দলীয় মনোয়ন তা কিছু দিনের মধ্যে নিশ্চিত হয়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত কে হবেন নৌকার মাঝি, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছু দিন।