মঙ্গলবার ● ২১ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » রাজনীতি » দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঘরে বাহিরে চ্যালেঞ্জের মুখে নাহিদ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঘরে বাহিরে চ্যালেঞ্জের মুখে নাহিদ
হাফিজুল ইসলাম লস্কর,সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কে হবেন নৌকার মাঝি তা নিয়েই চলছে নানা জল্পনা। কিন্তু হঠাৎই এসব আলোচনা ছাড়িয়ে মুখ্য আলোচলার কেন্দ্র বিন্দুতে উঠে এসেছেন তৃণমূল বিএনপি’র চেয়ারপার্সন শমসের মবিন চৌধুরী।
বিগত একাদশ নির্বাচনেও শমসের মবিন চৌধুরী’র নির্বাচনের তোড়জোর ছিলো, তবে এলাকায় খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেন নি তখনকার বিএনপির ‘দলছুট’ এই নেতা। এরপর প্রায় ৫ বছর তিনি ছিলেন অন্তরালে রাজনৈতিক কর্মতৎপরতার বাহিরে। তবে পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ফের আলোচনায় উঠে এসেছে সাবেক এই আমলা ও বিএনপি নেতার নাম। তবে এবার তিনি আলোচনায় ‘তৃণমূল বিএনপি’ নামের নবীন রাজনৈকি দলটির চেয়ারম্যান ও সিলেট-৬ আসনে প্রার্থী হিসেবে। অনেকেরই ধারণা বিএনপি নির্বাচনে না এলে এই তৃণমূল বিএনপিই হতে পারে প্রধান বিরোধী দল। সরকার থেকে ‘বিশেষ ছাড়’ পেতে পারে বলেও মনে করেন অনেকে। এসব কারণে শমসের মবিন চৌধুরী হতে পারেন এই আসনের অন্য প্রার্থীর দুশ্চিন্তার কারণ।
সিলেটের দুই উপজেলা গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার নিয়ে গঠিত নির্বাচনী আসন সিলেট-৬। এ আসনে টানা তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এর আগে ৯৬ সালেও আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য হয়েছেন নাহিদ। একসময় অপ্রতিদ্বন্দীই ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নাহিদের সেই রাজনৈতিক জৌলুস নেই। নিজ নির্বাচনী এলাকায় দলের ভেতরেই রয়েছে শক্ত প্রতিদ্বন্দী। তার উপর বিগত বন্যায় বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জের প্রধান সড়কসহ উপজেলা ও গ্রামীণ সড়কগুলোর বেহাল দশার দায় ও করোনাকালীন সময়ে জনগণের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতাও তার মনোয়ন ও নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।
যদিও সম্প্রতি কয়েকটি সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে, তারপরও দুই উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে সড়ক ভোগান্তির কারণে নাহিদের উপর অসেন্তোষ রয়েছে। এছাড়া দুটি উপজেলাতেই আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বিক্রি শুরুর পর দুই দিনে সিলেট-৬ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন কেনেন নাহিদসহ ১০ জন। তবে এ সংখ্যা ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে কিছুটা কম। সেবার ১৪ জন আওয়ামী লীগ নেতা দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। তার মধ্যে কানাডা ফেরত সরওয়ার হোসেনকে টপকে দলীয় মনোনয়ন পেতে অনেকটা বেগ পেতে হয়েছিলো নুরুল ইসলাম নাহিদকে। ২০১৮ সালে বিএনপি নির্বাচনে থাকায় নাহিদেই আস্থা রেখেছিলো আওয়ামী লীগ। কিন্তু এবারের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরওয়ার হোসেনের অবস্থান আগের চেয়েও শক্ত বলে মনে করেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
এমন যখন অবস্থা ঠিক তখন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে এসেছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত সমসের মবিন চৌধুরী। এরই মধ্যে প্রগতিশীল ইসলামী ফোরামের সাথে জোট করেছে ভোটের মাঠের নবীন এই দল। ১৫টি ইসলামী দল নিয়ে জোটগতভাবে তৃণমূলের প্রতীক সোনালী আঁশ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করেছেন দলটির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার। তবে দলের আভ্যন্তরীণ আর সাম্প্রতিক অসন্তোষকে ছাপিয়ে শমসের মবিন চৌধুরীকেই নুরুল ইসলাম নাহিদের জন্য বড় ঝুঁকি মনে করছেন স্থানীয় সমর্থক ও নেতাকর্মীরা।