বৃহস্পতিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » পানছড়িতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ
পানছড়িতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ইউপিডিএফ-মূল এর প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, খাগড়াছড়ির পানছড়িতে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট ঠ্যাঙাড়ে মোতালেব বাহিনী (নব্যমুখোশ) দুর্বৃত্ত কর্তৃক গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পিসিপি’র সাবেক সভাপতি বিপুল চাকমাসহ চার জনকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় ইউপিডিএফ ও সহযোগী সংগঠনগুলো তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, হরতাল, সড়ক অবরোধ ও বাজার বয়কটসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ইউপিডিএফ-মূল এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রবি শংকর চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি জিকো ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অংকন চাকমা এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ উক্ত হত্যাকাণ্ডকে জঘন্য, ন্যাক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত আখ্যায়িত করে বলেন, ‘সেনা-মদদপুষ্ট ও নিয়ন্ত্রিত ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীগুলোর সন্ত্রাসী অপতৎপরতার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নেই তা এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আর একবার প্রমাণিত হলো।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তারা বলেন, গতকাল পিসিপি’র সাবেক সভাপতি ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা (৩২), পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ—সভাপতি সুনীল ত্রিপুরা (২৮), গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ—সভাপতি লিটন চাকমা (২৯) ও ইউপিডিএফ সংগঠক রহিন বিকাশ ত্রিপুরা (৪৯), নীতি দত্ত চাকমা ও হরিকমল ত্রিপুরাসহ ৭ জন নেতা—কর্মী যুব সম্মেলন সফল করার জন্য লোগাঙ এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। আজ উক্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
‘ঘটনার সময় রাতে বিপুল চাকমাসহ উক্ত ৭ জন অনিল পাড়া নামক গ্রামে এক ব্যক্তির বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এ সময় রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা সময়ের মধ্যে পানছড়ি সদর এলাকা থেকে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মদদপুষ্ট ঠ্যাঙাড়ে নব্যমুখোশ দুর্বৃত্তদের একটি সশস্ত্র দল ওই বাড়িতে যায় এবং অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় একে একে বিপুল চাকমা, সুনীল ত্রিপুরা, লিটন চাকমা ও রুহিন বিকাশ ত্রিপুরাকে গুলি করে হত্যা করে।
‘নিহতদের মধ্যে বিপুল চাকমা চেঙ্গী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের করল্যাছড়ি বুদ্ধধন পাড়ার সুনয়ন চাকমার ছেলে। সুনীল ত্রিপুরার বাড়ি মাটিরাঙ্গা উপজেলার বড়নাল ইউনিয়নের সুরেন্দ্র রোয়াজা হেডম্যান পাড়ায়। তার পিতার নাম সুখেন্দু বিকাশ ত্রিপুরা। লিটন চাকমার বাড়ি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের দ্রোনচার্য কার্বারি পাড়ায়, তার পিতার নাম মৃত. চিন্তা মুনি চাকমা। রুহিন বিকাশ ত্রিপুরা পানছড়ির উপল্টাছড়ি ইনিয়নের পদ্মিনী পাড়ার বাসিন্দা জনাধন ত্রিপুরার ছেলে।
‘উক্ত চার জনকে হত্যার পর সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে ইউপিডিএফ সংগঠক নীতিদত্ত চাকমা, হরিকমল ত্রিপুরা ও সদস্য প্রকাশ ত্রিপুরাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাদেরকে এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।’
নেতৃবৃন্দ উক্ত হত্যাকাণ্ডের দায় সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনা প্রশাসন কোনভাবে এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেন এবং অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীগুলো ভেঙে দেয়ার দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, খুন-গুম করে জনগণের ন্যায্য আন্দোলন দমন করা যায় না। অতীতে অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হত্যা করার পরও ইউপিডিএফকে আন্দোলন থেকে বিচ্যুত করা যায়নি, ভবিষ্যতেও যাবে না।
তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে অরাজকতা সৃষ্টিকারী এই ঠ্যাঙাড়ে খুনি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এলাকায় এলাকায় গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
কর্মসূচি:
হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তি এবং ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ভেঙে দেয়ার দাবিতে ইউপিডিএফ ও সহযোগী সংগঠনগুলো নিম্নোক্ত কর্মসূচী ঘোষণা করেছে।
১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর প্রতিবাদ সমাবেশ ও শোক সভা। বিভিন্ন স্থানে কালো পতাকা উত্তোলন।
১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত পানছড়ি বাজার বয়কট। (প্রয়োজনে বয়কটের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।)
১৭ ডিসেম্বর পানছড়ি উপজেলাব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট।
১৮ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি জেলাব্যাপী সকাল—সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ সড়ক অবরোধ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ উক্ত কর্মসূচি সফল করার সকল শ্রেণী—পেশার জনগণকে উদাত্ত আহ্বান জানান।