বৃহস্পতিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » ঝালকাঠি সিভিল সার্জন অফিসের স্বাস্থ্য সহকারী থেকে কোটিপতি
ঝালকাঠি সিভিল সার্জন অফিসের স্বাস্থ্য সহকারী থেকে কোটিপতি
গাজী গিয়াস উদ্দিন, ঝালকাঠি :: ঝালকাঠি সিভিল সার্জন কার্যালয়ে স্বাস্থ্য সহকারী পদে যোগদান করে অবৈধভাবে জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা বনে যান গৌতম কুমার দাস। সরকার নির্ধারিত বেতন স্কেল থেকে পদ পরিবর্তন করে সরকারী দপ্তরকে ধোকা দিয়ে উচ্চ স্কেলে বেতন নিয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেন। কোটিপতি হয়ে ঝালকাঠি জেলা শহরে করেছেন একাধিক পাকা ভবন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে পাহাড়সম সম্পদ গড়ার অভিযোগ।
তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, ঝালকাঠি সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার গৌতম কুমার দাস স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকুরী নিয়ে পরবর্তীতে হেলথ এডুকেটর পদে অবৈধভাবে পদ পরিবর্তন করে পুনঃরায় অবৈধভাবে জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার পদে পদ পরিবর্তন করেন। এমনভাবে পদ পরিবর্তন ১৯৯৫ সনের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর নিয়োগ বিধি পরিপন্থি। এব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো স্মারক নং-৪৪৬০ তাং-৩১/০১/২০২২ইং, নং-১৪৮৯ তারিখঃ ০২/০৭/২০১৩, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হইতে বিবিধ-পরিপত্র/২০২১/৫৩৮৪ তারিখঃ ১৮/১১/২০২১ইং, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র নং-১৪১৭ তাং-২৬/০৯/২০১৭ক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হইতে পত্র নং-৫৪১০ তাং-৬/১১/২০১৩, এবং স্মারক নং-৮০৬০ তাং-২২/৮/২০১৯ইং এর পত্র মোতাবেক স্বাস্থ্য সহকারী পদ হইতে পদ পরিবর্তন সম্পূর্ণ বেআইনী। বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলার ক্যাশিয়ার (নিজ বেতনে) হাসান দুলাল স্বাস্থ্য সহকারী হইতে পদ পরিবর্তন করে নিয়মিত করণের ও স্কেল পেতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে আবেদন করলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর-এর স্মারক নং-৩৫১৯১ তাং-৮/৬/১১ পত্রে আবেদন অগ্রাহ্য হয়। এছাড়াও সাতক্ষিরা জেলার তালা উপজেলার হাফিজুর রহমান-স্বাস্থ্য সহকারীকে ক্যাশিয়ার পদে পদোন্নতি/পদায়ন করলে হিসাব মহা-নিয়ন্ত্রক এর কার্যালয় কর্তৃক ২৩/০৫/১১ইং তারিখের ৩৫১৬ নং স্মারকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বিধি বর্হিভুতভাবে স্বাস্থ্য সহকারী হতে ক্যাশিয়ার পদে পদ পরিবর্তন করিয়া হায়ার স্কেল নেওয়ার জন্য হিসাব রক্ষণ অফিসকে চাপ প্রয়োগ করেন এবং সরকারের উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ৯/৬/২০১১ তারিখের ১০৩৫ নং স্মারকে মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এব্যপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দেয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হইতে ১৫/৮/১৯৮৫ইং তারিখের নিয়োগ বিধির যথাযথ অনুসরণ না করে অবৈধভাবে বেতন নির্ধারণ না করার জন্য ২২৬২ নং স্মারকে সকল অফিসে চিঠি দেন। এহেন পরিস্থিতিতে অবৈধভাবে গৌতম কুমার দাস- স্বাস্থ্য সহকারী পদ পরিবর্তন করে হেলথ এডুকেটর পরে জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার পদে পদোন্নতি নিয়ে উচ্চ স্কেল গ্রহণ করতঃ সরকারের কোটি কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি সাধন করিয়াছেন যাহা তদন্ত স্বাপেক্ষে অতিরিক্ত গ্রহণকৃত অর্থ আদায় করে সরকারী কোষাগারে জমা করার জন্য অনুরোধ করা হইল। তাহার সাথে নিয়োগকৃত স্বাস্থ্য সহকারীগন এখন স্বাস্থ্য পরিদর্শক তাহাদের মুল বেতন এখন ২১-২২হাজার টাকা অপর দিকে গৌতম কুমার
দাসের মূল বেতন ৪৩-৪৪হাজার টাকা। যা সমুদয় আদায়যোগ্য। পদ পরিবর্তন করে অবৈধভাবে উচ্চ বেতন নিয়ে একাধিক পাকা বাড়ি, অন্য জেলায় ইটভাটার ব্যবসার মালিকানা অংশীদারসহ গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে সরকারী অর্থের অপচয় রোধের কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন ঝালকাঠির সচেতন মহল। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে গৌতম কুমার দাস জানান, আমি সরকারী বিধি অনুয়াযী আবেদনের পরে সুপারিশ মালার ৫৪নং সিরিয়ালে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে পদায়ন হয়েছি। কোন মহল তার ব্যক্তিস্বার্থে ভিন্ন উদ্দেশ্য এমন মিথ্যা অভিযোগ দিতে পারে। আমি সরকারী বিধির কোন ব্যত্যয় করিনি।
এবিষয়ে ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম জহিরুল ইসলামকে ফোন করলে অন্যজনে রিসিভ করে ব্যস্ততার কথা জানান।