সোমবার ● ২৯ জানুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » ঢাকা » ডামি নির্বাচনের সংসদ দিয়ে সরকারের আয়ু বাড়ানো যাবেনা : সাইফুল হক
ডামি নির্বাচনের সংসদ দিয়ে সরকারের আয়ু বাড়ানো যাবেনা : সাইফুল হক
আজ সকালে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আহুত সংবাদ সম্মেলনে পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, দেশের সকল বিরোধী দল গেল ৭ জানুয়ারীর পাতানো ডামি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও বর্জনের যে ডাক দিয়েছিল দেশের মানুষ অভূতপূর্ব স্বতস্ফুর্ততায় তাতে সাড়া দিয়ে সরকার, সরকারি দল ও নির্বাচন নামক তামাশার নজিরবিহীন গণঅনাস্থা প্রকাশ করেছে।
মানুষ তাদের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলার এই নির্বাচনী তামাশা গ্রহণ করেনি।গণতান্ত্রিক বিশ্ব হিসাবে পরিচিত দেশসমূহ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও ভাগবাটোয়ারার এই নির্বাচনী প্রহসন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তিনি বলেন, বিদেশীদের সৌজন্য সাক্ষাতকার ও কুটনৈতিক শিষ্ঠাচারকে সরকারের প্রতি সমর্থন বা তাদের অনৈতিক ক্ষমতা প্রলম্বিত করার বা টিকে থাকার সার্টিফিকেট হিসাবে দেখানোরও কোন অবকাশ নেই।
তিনি বলেন , ভারত, চীন,রাশিয়া এই সরকারের প্রতি তাদের যে সমর্থন ব্যক্ত করেছে তা প্রধানত বাংলাদেশ কেন্দ্র করে তাদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থের বিবেচনায়। ভারত এবারও স্থিতিশীলতার কথা বলে একটা ফ্যাসিবাদী সরকার ও তাদের পাতানো নির্বাচনী তামাশায় মদদ যোগাতে যেয়ে প্রকারান্তরে বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গতকালের বক্তব্যে এটা প্রমান হয়েছে যে, ভারতের মদদ ও হস্তক্ষেপেই তারা ডামি নির্বাচন করতে পেরেছেন ও ক্ষমতায় টিকে আছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জবরদস্তি করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে যেয়ে বাংলাদেশকে পরাশক্তি সমুহের লীলাক্ষেত্রে পরিনত করছে।এই পরিস্থিতি এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি ক্রমে বাড়িয়ে তুলছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে যেয়ে দেশের অবশিষ্ট গণতান্ত্রিক কাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আবারও একদলীয় শাসন জোরদার করতে তৎপর রয়েছে। জবরদস্তি করে ক্ষমতায় থাকতে তারা গোটা রাষ্ট্রকে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক পথে সরকার পরিবর্তনের পথও তারা বন্ধ করে দিয়েছে; এভাবে দেশকে তারা অকার্যকরী করে তুলছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ডামি নির্বাচনের সংসদ দিয়ে সরকারের আয়ু বাড়ানো যাবেনা। দেশের মানুষ এই দুঃশাসনকে কোনভাবেই আর বরদাস্ত করছেনা । ৭ জানুয়ারী ডামি নির্বাচন বর্জন করে দেশের মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে যে গণঅনাস্থা জানিয়েছে গণআন্দোলন - গণ সংগ্রামের পথে তাকে রাজপথে নিয়ে আসাই এখন বিরোধী দলসমূহের প্রধান কর্তব্য।
তিনি বলেন, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিরোধী দলসমূহের মধ্যে রাজপথের যে ঐক্য গড়ে উঠেছে নতুন পর্যায়ে আন্দোলন পুনর্গঠন ও পুনর্বিন্যস্ত করে যুগপৎ ধারায় এই ঐক্য আরও সংহত ও জোরদার করা প্রয়োজন। এর মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ তাদের অধিকার ও মুক্তির জন্য যে মরিয়া লড়াই এর জন্য প্রস্তুত তাকে সফল করতে বিরোধী দলসমূহকে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে তিনি আহবান জানাই।
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারীর নির্বাচনী তামাশার মধ্য দেশের সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে।সরকারের প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতি দেশকে আরও বিভক্তি বিভাজনের দিকে ঠেলে দিয়েছে; দেশকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অনিবার্য বিপর্যয়ের পথে।
এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে তিনি অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠায় কার্যকরি উদ্যোগ নিতে সরকার ও সরকারি দলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা, অবাধ,নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন এবং একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী সাম্যভিত্তিক গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠায় পার্টি ও গণতন্ত্র মঞ্চের ৩১ দফা গণতান্ত্রিক রুপান্তরের কর্মসূচী বাস্তবায়নেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আন্দোলনের কর্মসূচী
সংবাদ সম্মেলনে তিনি, সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা, দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ উর্ধগতি ও বাজার নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে ঢাকাসহ জেলা পর্যায়ে সমাবেশ ও বিক্ষোভের কর্মসূচী ঘোষণা করেন।
সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাশিদা বেগম, সাইফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সংগঠক জামাল সিকদার, মোঃ স্বাধীন মিয়া প্রমুখ।