বুধবার ● ৩ এপ্রিল ২০২৪
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাবিপ্রবি’তে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী
রাবিপ্রবি’তে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার :: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান, এমপি আজ ৩ এপ্রিল (বুধবার) দুপুর দেড়টায় রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সফর করেন। এসময় তার সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, এমপি এবং রাঙামাটির সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ জরতী তঞ্চঙ্গ্যা।
রাবিপ্রবি’র ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাঞ্চন চাকমা, রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইউসুফ, প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. নিখিল চাকমা, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান, এমপি এবং অতিথিবৃন্দকে সাদরে বরণ করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান, এমপি এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, এমপি।
প্রতিমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দীপংকর তালুকদার একাডেমিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাঙামাটি আমার একটি খুব প্রিয় জায়গা। এখানকার রাঙামাটির মানুষের যে সরলতা আমার মন ছুঁয়ে যায় সবসময়। আমার রাঙামাটির সফর সম্পর্কে জানার পর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেমন আছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করতে।
তিনি বলেন, আপনারা যেভাবে ক্যাম্পাসের প্রতিটি জায়গায় আর দেয়ালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উক্তি আর ছবি রেখেছেন। এটাই হলো বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ। আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো, বঙ্গবন্ধু উক্তি আর তাঁর আদর্শগুলোকে পালন করার চেষ্টা করবেন।
তিনি আরো বলেন, আপনাদের যে ঐতিহ্য, আপনাদের যে সংস্কৃতি, রাঙামাটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যাবো। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার সংস্কৃতিকে, দেশের মানুষের মধ্যে বিনিময় করার আহবান জানান। এতে দেশের ছেলেমেয়েরা বিপথে যাবে না। আমরা সংস্কৃতি চর্চা করবো।
তিনি বলেন, আমি ও আমার সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সবসময় আপনাদের পাশে থাকবো। আমরা এখানকার সংস্কৃতিকে কিভাবে উন্নত করবো সে চেষ্টা করবো। সমাজে যেসকল নাচ, গান, কবিতা, আবৃত্তি আর নাটক হারিয়ে যাচ্ছে, সেগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। তাহলে আমরা পারবো বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন। আপনারা স্মার্ট বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দেশে ও বিদেশে বাংলাদেশের নাম উঁচুতে নিয়ে যাবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এমপি দীপংকর তালুকদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদিচ্ছা ও উদ্যোগে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আজকের এই অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। রাঙামাটিতে বৈসাবি মেলাতে আসার আমন্ত্রণ এসে প্রধানমন্ত্রীর কথায় আজকে সাংস্কৃতিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আমাদের রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে এসেছেন। তিনি বক্তব্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুতে যারা কঠোর পরিশ্রম করেছেন তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলর, শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং শিক্ষার্থীবৃন্দদের স্মরণ করেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের অগ্রগতির বিষয়ের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন এবং রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যানের অগ্রগতির বিষয় সম্পর্কে মাননীয় প্রতিমন্ত্রীকে অবগত করেন। তিনি এই জুন মাসের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যান শেষ হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পরবর্তীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দুইটি হল, একটি একাডেমিক বিল্ডিং এবং অন্য আরেকটি বিল্ডিংসহ সর্বমোট চারটি বিল্ডিং আঠার মাসের মধ্যে শেষ করার কর্মপরিকল্পনা কথা তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে বর্তমানে দুইটি প্রশাসনিক ভবন, দুইটি একাডেমিক ভবন আর একটি লাইব্রেরি ভবন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একটি বৈচিত্র্যময় জায়গায়। এখানকার নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রয়েছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নৃতাত্বিক গোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য এই রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন। নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর উন্নয়নে আমরা প্রতিমন্ত্রীর কাছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করার আবেদন করছি।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাঙামাটির সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ জরতী তঞ্চঙ্গ্যা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রাবিপ্রবি ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলোজি অনুষদের ডীন ও সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ধীমান শর্মা।
মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন এবং শেষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন।