বৃহস্পতিবার ● ২ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » কাপ্তাই লেকে বেআইনী অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা দেড় বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি
কাপ্তাই লেকে বেআইনী অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা দেড় বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি
নির্মল বড়ুয়া মিলন :: রীট পিটিশন নং – ১১৮৮৫/২০২২ মুলে রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে বে-আইনী স্থাপনা, অবকাঠামো নির্মাণ এবং জবরদখল বন্ধে তাদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা রোধে আইনানুগ নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রীট মামলা দায়ের করেন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ এর পক্ষে সম্পাদক, এডভোকেট মোঃ সরওয়ার আহাদ চৌধুরী ও এডভোকেট রিপন বাড়ৈই, সুপ্রীম কোর্ট অব বাংলাদেশ, হল নং ০২, সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশন ভবন, ঢাকা, বাংলাদেশ। তাদের আবেদন আমলে নিয়ে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোঃ সোহরাওয়ার্দী উভয়ে কাপ্তাই লেক ভরাট, বাধ নির্মাণ, বেআইনী দখল রোধ সকল অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধে ১৭/১০/২০২২ ইংরেজি তারিখ এক নির্দেশনা দেন।
রিটকারীগণ প্রতিপক্ষ করেন ১. বাংলাদেশ সরকার পক্ষে সচিব, বন ও পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রনালয়, শাহবাগ, ঢাকা। ২. সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়, শাহবাগ, ঢাকা । ৩. মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা। ৪. পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট), পরিবেশ অধিদপ্তর, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা। ৫. চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন, কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ৬. ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা । ৭. পুলিশ সুপার, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা। ৮. উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর উপজেলা, রাঙামাটি, ৯. মোঃ আকবর হোসেন চৌধুরী, মেয়র, রাঙামাটি পৌরসভা। ১০. ম্যানেজার, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন, ফিসারিঘাট, রাঙামাটি। ১১.সহকারী কমিশনার (ভূমি), রাঙামাটি সদর উপজেলা, ১২. ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), কোতোয়ালি থানা, রাঙামাটি সদর, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা উপরোক্ত ১২ জন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন (পিআইএল) এবং বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (২০০০ এবং ২০০২ সালে সংশোধিত) এবং মহানগর, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের পৌর এলাকাসহ দেশের সকল পৌর এলাকার উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ এর অধীনে উপরোক্ত ১- ১২ নম্বর ক্রমিকে উল্লেখিত প্রতিপক্ষগন কর্তৃক রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে বে-আইনী স্থাপনা, অবকাঠামো নির্মাণ এবং জবরদখল বন্ধে তাদের নিষ্ক্রিয়তা বা ব্যর্থতা রোধে আইনানুগ নির্দেশনা চেয়ে এই রীট মামলা জনস্বার্থে করেন।
আবেদনকারীদের পক্ষে সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরশেদ, রাষ্ট্র পক্ষে ডেপুটি এর্টনী জেনারেল কাজী মাইনুল হোসাইন সহ অনান্য সরকারি আইন কর্মকর্তাকে শোনা হয়। আবেদনকারী গনের আবেদন এর প্রক্ষিতে আবেদনকারী ও রাষ্ট্র পক্ষকে শুনে রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই লেকে লেক ভরাট, বাঁধ নির্মাণ, বে-আইনী দখল রোধে এবং স্থায়ী / অস্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ প্রতিরোধে প্রতিপক্ষগনের নিস্ক্রিয়তা / আইনানুগ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা কেনো অবৈধ এবং এখতিয়ার বিহীন ঘোষণা করে উপরোক্ত প্রতিপক্ষগনকে কাপ্তাই লেকে বেআইনীভাবে নির্মিত সকল স্থাপনা, অবকাঠামো, বাঁধ অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং কাপ্তাই উপজেলাধীন কাপ্তাই লেককে রেকর্ড অনুযায়ী মূল আকারে বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হবে না তা গত ১৪ নভেম্বর, ২০২২ এর জবাব দেওয়ার জন্য সকল প্রতিপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয় ।
উপরোক্ত রুল পেন্ডিং অর্থাৎ প্রতিপক্ষগন কর্তৃক জবাব দাখিলের পূর্বেই সকল প্রতিপক্ষগনকে এই মর্মে আরো নির্দেশ দেওয়া হয় যে, কাপ্তাই উপজেলাধীন কাপ্তাই লেকে যাতে আর কোন প্রকার লেক ভরাট / বাঁধ নির্মাণ / স্থাপনা নির্মাণ না করা হয় তা যেনো নিশ্চিত করা হয় এবং একই সাথে উপরোক্ত ৬ এবং ১২ নং প্রতিপক্ষ যথাক্রমে জেলা প্রশাসক, রাঙামাটি ও ওসি, কোতোয়ালিকে ২ সপ্তাহের মধ্যে এই আদেশের কতটুকু বাস্তবায়ন হলো তা নিয়ে একটি রিপোর্ট দাখিল করার।
এছাড়া, আরো নির্দেশ দেওয়া হয় যে, জেলা প্রশাসক, রাঙামাটি এবং ওসি, কোতোয়ালী থানা কাপ্তাই লেকে একটি জরিপ/সার্ভে করে অবৈধ দখলদারদের একটি তালিকা ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করবেন। রেজিস্টার্ড ডাকযোগে, এডি রশিদ সহ সকল প্রতিপক্ষগনের উপর নোটিশ পাঠানো হয় ।
কিন্তু কাপ্তাই লেক ভরাট, বাধ নির্মাণ, বেআইনী দখল রোধ সকল অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা দেড় বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি।
বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে কাপ্তাই লেকের পানির স্তর নীছে নেমে যাওয়ার ফলে কাপ্তাই লেকের পাড়ে নতুন করে আরো কয়েক হাজার অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।
সচিব, বন ও পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রনালয়, সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়, মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর,পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট),পরিবেশ অধিদপ্তর, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন, ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা,পুলিশ সুপার, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর উপজেলা, রাঙামাটি, মেয়র, রাঙামাটি পৌরসভা, ম্যানেজার, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি), রাঙামাটি, সহকারী কমিশনার (ভূমি), রাঙামাটি সদর উপজেলা, অফিসার ইনচার্জ (ওসি), কোতোয়ালি থানা, রাঙামাটি সদর, রাঙামাটি পার্বত্য রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে বে-আইনী স্থাপনা, অবকাঠামো নির্মাণ এবং জবরদখল বন্ধে তাদের নিষ্ক্রিয়তা লক্ষ্য করা গেছে।
রাঙামাটি পৌর এলাকায় হ্রদের জায়গা সবচেয়ে বেশি দখল হয়েছে এছাড়া দখল হয়েছে কাপ্তাই উপজেলায়। তবে কতটা জায়গা দখল হয়েছে, কারা জড়িত, তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কাছে নেই।
উপরোক্ত বিষয়ে প্রতিপক্ষগণের বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে কেউ এবিষয় কথা বলতে রাজি হয়নি।