সোমবার ● ২০ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটিতে ইউপিডিএফের আর্ধদিবস অবরোধ পালিত
রাঙামাটিতে ইউপিডিএফের আর্ধদিবস অবরোধ পালিত
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) এর প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, লংগুদুতে পিসিজেএসএস (সন্তু লারমা) সন্ত্রাসী কর্তৃক ইউপিডিএফ-মূল এর এক কর্মী ও এক সমর্থককে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে রাঙামাটি জেলায় ইউপিডিএফের ডাকা অর্ধদিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ সফলভাবে পালিত হয়েছে।
আজ সোমবার ২০ মে-২০২৪ ভোর সাড়ে ৫টা থেকে এ অবরোধ দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।
অবরোধ সফল করতে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা জেলার রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ি যৌথ খামার ও বেতবুনিয়া এলাকায়, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের সাপছড়ি, কুদুকছড়ি, ঘিলাছড়ি, বেতছড়ি সোনারাম কার্বারি পাড়া (১৮ মাইল) এলাকায়; নানিয়ারচর সদরের টিএন্ডটি এলাকায়, ঘিলাছড়ি-রামহরি পাড়া সড়কে এবং বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটন সড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে টায়ার ও গাছের গুড়িতে আগুন জ্বালিয়ে এবং গাছের গুড়ি ও গাছ ফেলে পিকেটিং করে। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ি যৌথ খামার এলাকায় এবং রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের বেতছড়ি সোনারাম কার্বারি এলাকায় পিকেটিংয়ে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া নানিয়ারচর-রাঙামাটি নৌপথ, লংগুদু উপজেলার নৌপথগুলোতেও অবরোধ পালন করা হয়।
লংগুদু হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গত শনিবার (১৮ মে) রাঙামাটি সদর উপজেলার কুদুকছড়িতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ইউপিডিএফ এই অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।
অবরোধের কারণে সড়ক ও নৌপথে যান চলাচল বন্ধ ছিল। জেলা সদর থেকে সড়ক ও নৌপথে দূরপাল্লার যানবাহন ছেড়ে যায়নি।
অবরোধ পালনকালে বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের যৌথ খামার এলাকায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে অবরোধ সফল করতে পিকেটিং করার সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ পিকেটিংয়ে নিয়োজিত ইউপিডিএফের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, সমর্থকদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। তবে বড় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জেলার অন্যান্য এলাকা থেকেও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল)এর রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা আজ এক বিবৃতিতে অবরোধ সফল করায় জেলার সকল বাস-ট্রাক-লঞ্চ মালিক-শ্রমিক সমিতি, সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ ও কর্মসূচি বাস্তবায়নকারী নেতা-কর্মী-সমর্থকদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৯০০ সালের শাসনবিধি বা চিটাগাং হিলট্র্যাক্টস রেগুলেন বাতিলের সরকারের যে ষড়যন্ত্র তার বিরুদ্ধে এবং বান্দরবানে বম জাতিসত্তার উপর অন্যায় দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ইউপিডিএফ যখন জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করছে, ঠিক সে সময় সন্তু লারমা তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে দিয়ে লংগুদুতে ইউপিডিএফের এক কর্মী ও এক সমর্থককে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। এর মাধ্যমে সন্তু লারমা সরকারের কৃপা লাভ করে আঞ্চলিক পরিষদের গদি আঁকড়ে থাকতে চাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, আঞ্চলিক পরিষদ বর্তমানে খুনি সন্ত্রাসীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। সরকার থেকে প্রাপ্ত অর্থ বরাদ্দ জনগণের কল্যাণে ব্যবহার না করে মানুষ খুন করার কাজে ব্যবহার করছেন সন্তু লারমা। কিন্তু সরকার তার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে আঞ্চলিক পরিষদে বহাল তবিয়তে রেখেছে।
বিবৃতিতে ইউপিডিএফ নেতা সন্তু লারমার খুনের রাজনীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি অবিলম্বে খুনি সন্ত্রাসীদের গডফাদার সন্তু লারমাকে আঞ্চলিক পরিষদ থেকে অপসারণ করে বিচার এবং লংগুদুতে জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টানতমূলক শাস্তির দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (১৮ মে) সকালে লংগুদুর বড় হাড়িকাবা এলাকায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পিসিজেএসএস এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সাংগঠনিক কাজে নিয়োজিত ইউপিডিএফ-মূল এর সদস্য বিদ্যা ধন চাকমা তিলক ও সমর্থক (গ্রামবাসী) ধন্য মনি চাকমাকে এলোপাতাড়ি ব্রাশফায়ার করে নির্মমভাবে হত্যা করে।