বুধবার ● ৫ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » প্রধান শিক্ষকের অনিয়মে জর্জরিত বিদ্যালয়
প্রধান শিক্ষকের অনিয়মে জর্জরিত বিদ্যালয়
হাসান মাহমুদ, আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার পাদুইপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্ল্যান (স্লিপ), প্রাক প্রাথমিক শ্রেণী সজ্জিতকরণ ও উপকরণ ক্রয় ও মেন্টেইনেন্স এর টাকাসহ বিভিন্ন বরাদ্ধের সম্পুর্ণ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে। খোদ বিদ্যালয় ক্যাসমেন্ট এলাকার পাড়াবাসীরা সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন। তারা আরো বলেন প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতও থাকেননা। ইউৃএনডিপি’র অর্থায়নে নির্মিত সম্প্রতি জাতীয়করণ হওয়া এই বিদ্যালয়টি প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের কারণে দিন দিন ধ্বংসের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
স্থানীয়দের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে বিদ্যালয় পরিদর্শন করে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বিদ্যালয়ের একটি নতুন পাকা ভবনের কাজ চলমান থাকলেও বর্তমান বিদ্যালয় ভবনটি যত্রতত্র অবস্থায় পড়ে আছে। এমনকি বিদ্যালয়ের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি রক্ষনাবেক্ষণের জন্য কোন কক্ষে একটি তালাও নেই। অনুন্ধানে আরো জানা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্ল্যান (স্লিপ) এর দুই কিস্তিতে ২৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়, বিদ্যালয় মেন্টেইনেন্সের জন্য ৪০ হাজার টাকা এবং প্রাক প্রাথমিক শ্রেণী সজ্জিতকরণ ও উপকরণ ক্রয়ের জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হলেও তার কোন টাকাই ব্যয় না করে সম্পুর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ।
স্লীপ এর টাকা ব্যবহার বিবিধতে বিদ্যালয়ের দেওয়ালে ছবি অঙ্কন, নীতিবাক্য লিখন, বিদ্যালয়ের গেট করা ও নামফলক লাগানো, বিভিন্ন প্রতিযোগীতার আয়োজন করা ও পুরস্কার বিতরণ, গরিব শিক্ষার্থীদের কাব ড্রেস ও ক্ষুদে ডাক্তারদের অ্যাপ্রোন তৈরী করা, বিদ্যালয় মাঠে বাগান করা, টয়লেটে সাবান সেন্ডেল ও হারপিক ক্রয়, অভিভাবক সমাবেশে অভিভাবকদের আপ্যায়ন, পানির ফিল্টার ও ডাসবিন ক্রয়, বঙ্গবন্ধু কর্ণা, মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার ও বুক কর্ণার তৈরী করাসহ বিভিন্নভাবে এসব টাকা ব্যয় করার নির্দেশনা থাকলেও তার কোনটাই করা হয়নি। প্রাক প্রাথমিকের জন্য ক্রয় করা হয়নি কোন উপকরণ।
এছাড়াও গোপনে তদন্ত করে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ প্রতিদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেননা। শিক্ষক হাজিরা খাতায়ও বেশ কয়েকদিন তার কোন স্বাক্ষর পাওয়া যায়নি। এছাড়াও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেজিস্টারে ৭৮ জন ভূয়া শিক্ষার্থীর নাম থাকলেও প্রকৃত পক্ষে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আছে ৩৮ জন।
এবিষয়ে জানার জন্য প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকের সব প্রশ্ন শোনার পর ফোন কেটে দেন এবং পরবর্তীতে পূনরায় ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। পরে স্বশরীরে দেখা করলে তিনি শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলতে বলে পাশ কাটিয়ে যান।
আলীকদম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোশারফ হোসেন খান সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এই বিষয়টা আমার নলেজে ছিলোনা। আমি অতি দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবো। সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জনাবে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্ধকৃত টাকা প্রধান শিক্ষক উত্তোলন করেছে, সুতরাং তাকেই টাকার হিসেব দিতে হবে। অফিসে যদি কাউকে ঘুষ দিয়ে থাকে বা কেউ ঘুষ চেয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।