শুক্রবার ● ১৪ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » দিনাজপুর » ঘোড়াঘাটে অবৈধভাবে মাদ্রাসার অফিস সহকারী নিয়োগের পাঁয়তারা
ঘোড়াঘাটে অবৈধভাবে মাদ্রাসার অফিস সহকারী নিয়োগের পাঁয়তারা
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে কৃষ্ণরামপুর ফাজিল স্নাতক মাদ্রাসায় অবৈধভাবে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে অবৈধভাবে নিয়োগের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ২ জন বাদী হয়ে বিজ্ঞ ঘোড়াঘাট সহকারী জজ আদালতে একটি মোকদ্দমা দায়ের করেন।
গত রবিবার মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ও চাকুরী প্রার্থী গোলাম রব্বানী বাদী হয়ে অধ্যক্ষ ও গভর্নিং বডির সভাপতি আহসানুল হাবিব সহ ১৩ জনকে বিবাদী করে বিজ্ঞ আদালতে একটি মোকদ্দমা দায়ের ও মামলা চলাকালে নিয়োগ স্থগিত করে বিবাদীগণের বিরুদ্ধে অন্তবর্তীকালীন ও অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আদেশ দানের আবেদন করেন।
মামলার আর্জি সূত্রে জানা গেছে, বিধিমালা অনুযায়ী উক্ত মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর শূন্য পদ থাকায় গত ২৭/১২/২০২২ইং তারিখে দৈনিক সমকাল ও স্থানীয় একটি পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে গোলাম রব্বানী সহ ১৫ জন প্রার্থী আবেদন করেন। প্রার্থীগণের আবেদন যথারীতি যাচাই-বাছাই করে গোলাম রব্বানীকে চাকুরী দিবেন মর্মে গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের উপস্থিতিতে সভাপতি আহসানুল হাবিব মাদ্রাসার উন্নয়নকল্পে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে সভাপতি আরও টাকা দাবী করলে চাকুরী প্রার্থী গোলাম রব্বানী তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে সভাপতি তার মনোবাসনা পূরণে ব্যর্থ হয়ে নিয়োগ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করে। বিজ্ঞপ্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় ২য় বার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেও মনোবাসনা পূরণে ব্যর্থ হয়ে পূর্বের আবেদনকারীর আবেদন করার আবশ্যকতা নেই জানিয়ে গত ২৪/০১/২০২৪ইং তারিখে দৈনিক মানবকণ্ঠ পত্রিকায় তৃতীয়বারের ন্যায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।
সভাপতি আহসানুল হাবিব একজন রাজনৈতিক দলের দলের সদস্য হওয়ায় নিজেকে প্রভাবশালী ব্যক্তি মনে করে তার সিদ্ধান্তে মনোনীত প্রার্থী নির্বাচিত করা হবে বলে আবেদনকারী প্রার্থীগণের আবেদন যাচাই-বাছাই করার পূর্বেই গভর্নিং বডির সম্মুখে জানিয়ে দেয়। এমতাবস্থায় সভাপতির মনোনীত প্রার্থী নাদিরা আক্তার দিতির নিকট থেকে কাঙ্ক্ষিত চাহিদা অনুযায়ী আর্থিক লাভবানের পর অধ্যক্ষের মাধ্যমে গভর্নিং বডির সভা আহ্বান করেন। সভায় নাদিরা আক্তার দিতিকে নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ্যে প্রার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে বিবেচনা না করে নামমাত্র কয়েকজনের আবেদন সঠিক মর্মে বিবেচনা করেন। যাচাই-বাছাইয়ে অন্যান্য প্রার্থী সহ বাদী গোলাম রব্বানীকে বিবেচনা না করায় আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত ও তার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
অপরদিকে মোকদ্দমার বাদী ও গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের অনুপস্থিতিতে অবৈধভাবে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা হলে তিনি বিষয়টি জানতে পেরে বাঁধা দিলে সভাপতি তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি একটি মামলা করেন। সভাপতির একক সিদ্ধান্ত ও অন্যায় ক্ষমতাবলে নিয়োগ সম্পন্ন হলে মাদ্রাসার অপূরণীয় ক্ষতি ও যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হবে মর্মে বাদীদ্বয় প্রতিকার প্রার্থনা করে আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত তা আমলে নিয়ে বিবিদীগণকে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত ও জবাব দাখিলের জন্য আদেশ দেন।
এ ব্যাপারে কৃষ্ণরামপুর ফাজিল স্নাতক মাদ্রাসার সভাপতি আহসানুল হাবিবের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, মামলার আর্জিতে তাদের মনগড়া বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। টাকা লেনদেন তো দূরে থাক নিয়োগের জন্য আবেদন পর্যন্ত তারা করেননি। যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ার কারণে আমরা তৃতীয়বারের মতো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। একটি গ্রুপ প্রতিহিংসামূলক ভাবে আমার সাথে দ্বন্দ্ব করে আসছে। মূলত আমি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আগের সভাপতির পক্ষের লোকজন দ্বন্দ্বে জড়িত হয়েছে। আমি সমন হাতে পেয়েছি, আমরা যথাসময়ে এর জবাব দাখিল করবো।