মঙ্গলবার ● ২ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » ঝালকাঠিতে পানি উঠছে না অধিকাংশ নলকূপে
ঝালকাঠিতে পানি উঠছে না অধিকাংশ নলকূপে
গাজী মো. গিয়াস উদ্দিন বশির, ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ঝালকাঠি শহর ও গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ হস্তচালিত নলকূপে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও নতুন নলকূপে পানি উঠলেও লবণাক্ততার কারণে তা খাবার অনুপযোগী। বিকল্প উপায়ে খাবার পানি সমস্যা দূর করতে সরকার সৌরশক্তিচালিত পিএসএফ (পন্ডস স্যান্ড ফিল্টার) প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছে। যদিও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ বলছে, এ অবস্থায় মোটরচালিত গভীর নলকূপের কোনো বিকল্প নেই।
জানা গেছে, মাটি থেকে ১৮ ফিট নিচে থাকার কথা থাকলেও পানির স্তর ২২ থেকে ৩১ ফুট নেমে গেছে। এতে সুপেয় পানিসংকটে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। ইতিমধ্যেই জেলার দুইটি পৌরসভায় ৮০ শতাংশ এবং ইউনিয়ন সমূহে ৩৫ শতাংশ নলকূপ অকেজ হয়ে পড়েছে। ঝালকাঠি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পানির স্তর নেমে যাওয়ায় সরকার ইতিমধ্যেই জেলায় তিনটি উপায়ে পানি সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলো হচ্ছে—প্রতিটি ৮৬ হাজার টাকা ব্যয়ে হস্তচালিত গভীর নলকূপ স্থাপন, ৫০ হাজার টাকায় রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং এবং সাড়ে ৭ লাখ টাকায় সোলার পিএসএফ পদ্ধতি। উল্লিখিত হস্তচালিত গভীর নলকূপ স্তর সমস্যার কারণে বর্তমান পরিস্থিতিতে কার্যকর নয়। তাই এর সঙ্গে সাবমারসিবল মোটর যুক্ত করতে পারলে নলকূপগুলো অচল হওয়ার আশঙ্কামুক্ত হবে। এ ক্ষেত্রে হারভেস্টিং পদ্ধতি খরচ কম হলেও কার্যকর। কিন্তু তা বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করতে হবে। তৃতীয় পদ্ধতি পিএসএফ ব্যয়বহুল হওয়ায় বরাদ্দ জটিলতায় বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। এ পদ্ধতির মাধ্যমে কমপক্ষে ১০টি পরিবার জীবাণুমুক্ত সুপেয় পানি পান করতে পারবে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের ঝালকাঠি সদর উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী অমিত কর্মকার জানান, উপজেলায় ৫ হাজার নলকূপ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে গত ৫ বছরে ১ হাজার ৩০০ টি নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু পানির স্তর নিচে নামার কারণে এসব নলকূপ হুমকির মুখে পড়েছে। কিছু দিন আগে পোনাবালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্থাপন করা চারটি নলকূপে পানি পাওয়া যায়নি।
জেলায় পানির স্তর নিচে নেমে নলকূপ অকেজ হওয়ার বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার এরশাদুজ্জামান মৃদুল বলেন, পানির স্তর নিচে নামায় হস্তচালিত নলকূপে পানি উঠছে না। এতে ক্রমান্বয়ে সুপেয় খাওয়ার পানির সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে। তাই হস্তচালিত গভীর নলকূপের সঙ্গে সাবমারসিবল মোটর স্থাপনের কোনো বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে ৭০ ফুট গভীরতা থেকে পানি ওঠানো সম্ভব। তাই ভবিষ্যতে নলকূপের সঙ্গে সাবমারসিবল মোটর স্থাপনের মৌখিক প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।