সোমবার ● ৭ অক্টোবর ২০২৪
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে হত্যা মামলার আসামী শিক্ষক নূরুল ইসলাম আত্বগোপনে
প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে হত্যা মামলার আসামী শিক্ষক নূরুল ইসলাম আত্বগোপনে
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :: বিনা ছুটিতে ১টি হত্যাসহ তিনটি মামলার বোঝা কাঁধে নিয়ে পালাতক স্কুল শিক্ষক নুরুল ইসলাম কুষ্টিয়া সদর উপজেলার স্বস্তিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম ওরফে নুরুর বিরুদ্ধে ১টি হত্যা সহ ৩টি মামলা নিয়ে পারাতক আছেন। গত ৭ তারিখ থেকে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত বলে জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন।
নাম প্রকাশে বেশ কয়েকজন শিক্ষক জানান তার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। আমরা তার বরখাস্তের জন্য উর্ধতন কর্র্তপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে পড়ে গত ৫ই আগষ্ট স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। পতনের পরদিন ৬ আগষ্ট সকাল সাড়ে ৮ টায় বিজয় মিছিলে অংশগ্রহণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দরবেশপুর গ্রামের জনৈক শহীদের বাড়ির সামনে পৌঁছালে আসামি টাইগার মামুন, সহকারী প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু ও তার পেটুয়া বহিনীর হাতে থাকা রাম দা দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে সেকোমের মাথায় এলাপাথারী কুপিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে।
ঐ সময় সেকোমের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পর ১২ আগষ্ট সেকোমের অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে পুনরায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভাদালিয়ার ত্রাস খ্যাত মামুন অর রশিদ ওরফে টাইগার মামুনকে প্রধান আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় ১৩ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেনে নিহতের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন।
উক্ত মামলার ১০ নং আসামী হলেন স্বস্তিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু। যার মামলার ধারা নং ১৪৩/৩৪১/৩০২/১১৪/৩৪ তারিখ গত ১৪ই আগষ্ট ২০২৪। তার বিষয়ে এলাকাবাসী প্রচন্ড ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমরা উক্ত শিক্ষকের বরখাস্তের জোর দাবী জানাচ্ছি। এ বিষয়ে গত রবিবার উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরজমিনে প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি জানি তার বিরুদ্ধে ১টি হত্যা মামলা সহ আরো দুটি মামলা হয়েছে। তবে তিনি ৫ই আগষ্টের পর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত রয়েছে। গত ১৮ তারিখে মেডিকেল ছুটির জন্য একটি আবেদন দিয়ে চলে জান। তার পর থেকে আমার সাথে তার কোন যোগাযোগ নেই। তিনি এটাও বলেন তার ছুটির বিষয় নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির কোন মিটিং হয় নাই বিধায় তিনি বিনা ছুটিতেই আছেন।
অন্যদিকে স্কুলের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম শীলের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার কাছে স্কুলের প্রধান শিক্ষক কোন কিছু বলেন নাই। যদি তিনি হত্যা মামলার আসামী হয়ে থাকেন তাহলে আমরা তাকে অবশ্যই বরখাস্ত করবো। এছাড়াও জেলা শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলামের মুঠোফোনে কথা বলে তিনি ঐ একই কথা বলেন যে, তিনি যদি হত্যা মামলার আসামী হন তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রথমে সাময়িক বরখাস্ত করবে ম্যানেজিং কমিটি। দুই মাস পার হতে যাচ্ছে এখনো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন বুঝতে পারছি না। তবে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপর মহলে জানানো হবে।