শিরোনাম:
●   পার্বতীপুর রেলওয়ে ইর্য়াডের আম গাছে যুবকের আত্মহত্যা ●   রংধনু ক্লাবের কার্যকরী পরিষদ গঠিত ●   কাউখালী তাহেরিয়া রশিদা সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসার সভা ●   পাকুন্দিয়ায় ইয়ুথ পিস অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ গঠিত ●   বৈরী আবহাওয়ায় ও শীতের তীব্রতায় বাড়ছে কৃষকের দুশ্চিন্তা ●   কোন হটকারিতায় গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নষ্ট করা যাবেনা ●   তরফভাইখাঁ সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   মিরসরাইয়ে শীতার্তের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   ঈশ্বরগঞ্জে জিয়াউর রহমান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ●   লংগদু এস এস সি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রী বিতরন ●   ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৫ এর মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন সম্ভব ●   হালদা থেকে বিপন্ন গাঙ্গেয় প্রজাতির মৃত ডলফিন উদ্ধার ●   খাগড়াছড়ির আলুটিলায় পর্যটকবাহী বাস উল্টে আহত-২০ ●   পানছড়িতে লোগাং জোন এর অনুদান সামগ্রী প্রদান ●   আত্রাইয়ে কুলি-বেদে সম্প্রদায়ের মাঝে জেলা প্রশাসকের কম্বল বিতরণ ●   চুয়েটে স্থাপত্য বিভাগের ১ম জাতীয় কনফারেন্স শুরু ●   বিজিবির অভিযানে খাগড়াছড়িতে ১২ অনুপ্রবেশকারী আটক ●   ঈশ্বরগঞ্জে জাতীয় প্রবাসী দিবস পালিত ●   কুষ্টিয়ায় বালুঘাট দখল নিতে তাণ্ডব চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ●   রাউজানে বিকাশ প্রতারকের ফাঁদে নারী উদ্যোক্তা তানিয়া ●   যোবায়ের-সাদপন্থীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র ইজতেমা মাঠ : নিহত ৩ ●   মিরসরাইয়ে মধ্য তালবাড়ীয়া স্পোর্টিং ক্লাবের কমিটি গঠন ●   জিয়া কিংবা শেখ মুজিব নয়; জনগণই মুক্তিযুদ্ধের মূল নায়ক : টিপু ●   নবীগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় কলেজ ছাত্রের প্রাণহানি ●   জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এর নেতৃত্বে থাকবেন ড. ইউনূস ও আলী রীয়াজ ●   রেডব্রিজ কমিউনিটি ট্রাস্ট ইউকে বিজয় দিবস উদযাপন ●   ঈশ্বরগঞ্জ প্রেসক্লাবের নির্বাচন : সভাপতি আউয়াল, সম্পাদক আতাউর ●   কাউখালীতে মহান বিজয় দিবস উদযাপন ●   দীপংকর তালুকদার এর অবৈধ সম্পদের তদন্তে নেমেছে দুদক ●   ঈশ্বরগঞ্জে বিজয় দিবস পালিত
রাঙামাটি, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
বৃহস্পতিবার ● ১০ অক্টোবর ২০২৪
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মৌলভীবাজারের পাঁচগাঁওয়ের দূর্গাপূজা ও কিছু কথা
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মৌলভীবাজারের পাঁচগাঁওয়ের দূর্গাপূজা ও কিছু কথা
বৃহস্পতিবার ● ১০ অক্টোবর ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মৌলভীবাজারের পাঁচগাঁওয়ের দূর্গাপূজা ও কিছু কথা

--- প্রভাষক উত্তম কুমার পাল হিমেল :: প্রতিবছর শরতকালে সারা বাংলাদেশে শারদ উৎসব ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন হয়ে । দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারনে এ বছর পূজার আমেজ অনেকটা অন্যান্য বছরের চেয়ে ভিন্ন বলে মনে হচ্ছে। আমাদের সিলেট বিভাগেও সর্বত্রই দুর্গোৎসবকে ঘিরে চলছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর থানার পাঁচগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী শারদোৎসবও এবার বর্ণিল আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে। এক অলৌকিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচগাঁওয়ে প্রতি বৎসব দূর্গোৎসব আয়োজিত হয়। পাঁচগাওয়ে প্রত্যেক বছর লাখো লাখো ভক্ত-পূজারী দেশ-বিদেশ থেকে আসেন মহামায়ার শ্রীরাঙ্গা রাতুল চরণে পুষ্পাঞ্জলী প্রদানের প্রত্যাশায়। কী অলৌকিক ঘটনার জন্য পাঁচগাওয়ে পূজো হয়? তারই সংক্ষিপ্ত তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদনটি তৈরী করা হয়েছে।
তিনশ বছর পূর্বে তৎকালীন সময়ে সময়ে পাঁচগাঁওয়ের জমিদার ছিলেন রাজারাম দাস। এই বিশিষ্ট জমিদার রাজারাম দাসের সাধক পুত্র’র নাম সর্ব্বানন্দ দাস। সাধক সর্ব্বানন্দ দাস তৎকালীন সরকারের মুন্সী পদবীর কাজ করতেন। ভারতের আসামের শিব সাগর জেলায় ছিল সর্ব্বানন্দ দাসের কর্মস্থল। ঐ সময় তিনি কামাখ্যাধামে পূজা করার বাসনা মনে পোষেন। নিজের বাড়ি পাঁচগাঁওয়ে যথাবিহিত পূজা করার জন্য স্ত্রী এবং কর্মচারীদের নির্দেশ প্রদান করেন। যথাযথভাবেই কামাখ্যাধামে সর্ব্বানন্দ দাস পূজোর আয়োজন করলেন। মহাষ্টমী দিনে পঞ্চম বর্ষীয়া কুমারী পূজা দীর্ঘ ৬ ঘন্টা ধরে চলতে লাগলো। পূজা শেষ হলো। সর্ব্বানন্দ দাস ভগবতীকে প্রণাম করলেন। প্রনাম করার পরই এক অভূতপূর্ব দৃশ্য তিনি অবলোকন করেন। তিনি দেখলেন-কুমারীর পুরো শরীরের বর্ণ পরিবর্তন হয়ে লাল বর্ণ ধারণ করেছে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় সর্ব্বানন্দ দাস জানতে চাইলেন- মাগো পূজো সুসম্পন্ন হলো কি না? ভগবতী দেবী বললেন- ‘হ্যাঁ, তোর পূজা সিদ্ধ হয়েছে। এই লাল বর্ণে তোর বাড়ী পাঁচগাঁওয়ে আবির্ভূত হয়েছিলাম।’ ‘এখন থেকে এই লাল বর্ণে তুই আমার পূজা করবি। সর্ব্বানন্দ দাস ভয়ে ভয়ে বললে-মাগো তুমি যে আমার বাড়ীতে আবির্ভূত হয়েছিলে তার প্রমাণ কি? উত্তরে দেবী বললেন- ‘তোর দূর্গা মন্ডপের বেড়ার উপর আমার হাতের ছাপ রেখে এসেছি, তুই দেখিস তা’। ভগবতী সর্ব্বানন্দের পূজায় সন্তুষ্ট হয়ে বর দিতে চাইলে, সর্ব্বানন্দ দাস ভগবতীর শ্রীপাদপদ্ম চাওয়ার বর কামনা করেন। ভগবতী দেবী অন্য বর চাওয়ার আহবান জানালে সর্ব্বানন্দ দাস প্রার্থনা করেন অন্য একটি বর। প্রার্থিত বরটি ছিল- ‘আমার বাড়ী পাঁচগাঁওয়ে স্থাপিত দূর্গা মন্ডপে তুমি চিরস্থায়ীভাবে অধিষ্ঠিত থাকবে।’ ভগবতী দেবী ‘তথাস্তু বলে তার নিজ মাথার পরিহিত সোনার সিঁথি খুলে সর্ব্বানন্দ দাসের হাতে তুলে দেন’। তিনি নির্দেশ করেন- ‘প্রতি বছর বছর মহানের সময় এই সিঁথি দ্বারা করানোর জন্য’। তখন সর্ব্বানন্দ দাস মহামায়ার শ্রীরাঙা রাতুল চরণে লুটিয়ে পড়েন।

পূজোয় বাঁধা, অতঃপরঃ
কামাখ্যাধাম হতে সর্ব্বানন্দ দাস নিজ বাড়ীতে আসেন। তিনি দেখতে পান, ‘ভগবতী দেবীর হাতের ছাপ পূজা মন্ডপের বেড়ার উপর’। পরের বছর সর্ব্বানন্দ দাস পাঁচগাঁওয়ে পূজোর আয়োজন করা শুরু করেন। ভগবতী দেবীর আদেশ অনুযায়ী মাতৃমূর্তিকে কামাখ্যাধামের কুমারীর শরীরের লাল বর্ণের সাদৃশ্য দ্বারা রঞ্জিত করান সর্ব্বানন্দ দাস। ভগবতীর ধ্যানে উলে¬খ আছে,‘ভগবতী দূর্গা দেবী অতশী পুষ্প বর্ণভা’। কিন্তু পাঁচগাঁওয়ের ভগবতী দেবীকে লোহিত লাল বর্ণ করে সাজালে, সর্বস্তরের গ্রামবাসী, সর্ব্বানন্দর আত্মীয়-স্বজন, গুরু-পুরোহিত বলতে লাগলেন, ‘ভগবতী দেবী লাল বর্ণা শাস্ত্র বিরুদ্ধ’। তারা এই অভিযোগ এনে পূজোর আয়োজন থেকে বিরত থাকার জন্য সর্ব্বানন্দ দাসকে চাপ প্রয়োগ করেন। সর্ব্বানন্দ দাস কামাখ্যাধামের চাক্ষুস অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করলে সকলেই একবাক্যে মনগড়া ও পাগলামী বলে পূজোয় যোগদান না করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই বৎসর ষষ্ঠ দিন থেকে রাত পর্যন্ত কেউ পূজোয় আসেন নি। পুরোহিতের অভাবে সেদিন দেবীর বোধন সম্পন্ন হলো না। সর্ব্বানন্দ দাস বিচলিত হলেন। তিনি পাগলের মতো ভগবতী দেবীকে ডাকতে লাগলেন। চোখের জলে পূজো মন্ডপ ভাসালেন। রাত পোহাবার আর কিছু সময় বাকী। এমনি মুহুর্তে গ্রামবাসী, জ্ঞাতিবর্গ, গুরো-পুরোহিতসহ সর্বস্তরের ভক্ত-পূজারীরা দলে দলে পূজা মন্ডপে আসতে লাগলেন। তারা এসে ভগবতী দেবীকে প্রনাম দিয়ে জানান- ভগবতী দেবী স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন,‘লাল বর্ণে পূজা করতে হবে’। তখনি শুরু হয় মহাসপ্তমির পূজা। ঢাক-ঢোল, শঙ্খ-ঘন্টা এবং উলু ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে পূজা মন্ডপ। সে বছর ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং আনন্দঘন পরিবেশের মধ্যেই ভগবতী দেবীর পূজা সম্পন্ন হয়।

খন্ডিত মহিষ জীবিতঃ
জনশ্র“তি রয়েছে সর্ব্বানন্দ দাস তার গুরুকে বলেছিলেন- তন্দ্রে যেমন মহাবলি দেবার বিধান আছে, তেমনি সাধন বলে খন্ডিত মহিষকে জীবিত করারও বিধান রয়েছে। গুরুদেব সর্ব্বানন্দ দাসের প্রস্তাবে রাজী হয়ে গেলেন। তিনি নির্দেশ দিলেন ‘খন্ডিত মহিষকে কেউ স্পর্শ করতে পারবে না’। সর্ব্বানন্দ দাস খন্ডিত মহিষকে কেউ স্পর্শ না করার ব্যবস্থা করলেন। তিনি পূজা মন্ডপের চারিদিকে সন্ধ্যার পর থেকে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। সন্ধ্যার পর একটি বড় মশারী দ্বারা মহিষকে আচ্ছাদিত করা হয়। এরপর খন্ডিত মস্তক মহিষের গলার সঙ্গে সংযোজন করেন সর্ব্বানন্দ দাস। তারপরেই গুরু-শিষ্য দু’জন মিলে সারারাত মশারীর ভিতর বিধিমতো তান্ত্রিক পূজা সম্পন্ন করেন। ভোরের সূর্য উদিত হবার পর সর্ব্বানন্দ দাসকে নিয়ে সেই মহিষ দক্ষিণ দিকে দৌড় শুরু করে দিল। তার সাথে সাথে গুরুদেবও কমন্ডলু হাতে নিয়ে দৌড় দিলেন। নাগের বাড়ীর পুকুর পাড়ের কাছে যাবার পর গুরুদেব কমন্ডলু থেকে মন্ত্রপুত জল মহিষের উপর ছিটিয়ে দেন। কমন্ডলু থেকে জল ছিটিয়ে দেবার পরপরই মহিষ মাটিতে পড়ে যায়। সেই সময় মহিষের গলায় মস্তক সংযোজন হয়।
অসন্তুষ্ট দেবী, সর্ব্বানন্দ দাস’র নির্দেশনামা প্রায় ২/৩ বছর পর সর্ব্বানন্দ দাস কামাখ্যাধামে গিয়ে পুনরায় কুমারী পূজা করেন। সর্ব্বানন্দ দাস কুমারী দেবীর কাছে জানতে চাইলেন- তার বাড়ী পাঁচগাঁওয়ে সুষ্ঠু ও সঠিকভাবে পূজা সম্পন্ন হচ্ছে কি না? উত্তরে দেবী বললেন- গত বছর নবমী দিনে যে শাড়ীখানা দেবী দূর্গাকে দেয়া হয়েছিল, তা ছেঁড়া ছিল এবং পরিবারের গৃহিনীর শাড়ীর চাইতেও তা নিæমানের ছিল। সর্ব্বানন্দ দাস খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন দেবীর কথাই সঠিক। পূজা, ধারকতা, ১০৮ চন্ডীপাঠ, দশ হাজার হোম ও পূজার অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করার জন্য সর্ব্বানন্দ দাস গুরু-পুরোহিত, প্রতিমা গঠক ও পূজার সামগ্রী প্রস্তুতকারীদের জন্য পৃথক পৃথক ভূমি প্রদান করেন। সর্ব্বানন্দ দাস দেবীর সেবার কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য মৃত্যুর পূর্বে তৎপুত্র কমলচরণ বাবুকে একখানা নির্দেশনামা দিয়ে যান। কমলচরণ বাবুও তৎপুত্র কালীকিশোর বাবুকে এবং কালীকিশোর বাবুও তৎপুত্র কালীপদ বাবুকে অনুরূপ একখানা নির্দেশনামা লিপিবদ্ধ করে দেন। কালীপদ বাবু ৪৮ বছর বয়সে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। সে সময় তার পুত্রগণ ঘি এর মূল্য বৃদ্ধি পাবার কারণে হোম কমাইয়া দেবার সিদ্ধান্ত নেন। এ খবর কালীপদ বাবু জানতে পেরে তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি নির্দেশনামার সিদ্ধান্ত ঠিক রাখার জোর নির্দেশ দেন। পুত্রগণ কালীপদ বাবুর সিদ্ধান্ত মেনে নেন। কালীপদ বাবুর অসুস্থ্যতার পর তৃতীয় পুত্র শান্তি বাবু ভগবতীর পূজার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শান্তি বাবু যথাবিহীত পূজা প্রতি বছরই সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে আয়োজনে মগ্ন হন। ১৩৩৮ বাংলায় শান্তি বাবু দেহত্যাগ করেন। ১৩৬২ বাংলার ১লা বৈশাখ হতে জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হয়। জমিদারী প্রথাম বিলুপ্তির পর দূর্গা পূজা ভিতর বাড়ীতে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তখন ভক্ত-পূজারীরা সমবেত হয়ে যথারীতি পূজার কার্যাদি আগের মতই পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন। সেই অনুযায়ী পূজা প্রতি বছরই চলতে থাকে। শান্তিবাবুর কনিষ্ঠ পুত্র শ্রী সঞ্জয় দাস প্রতি বছর প্রবাস থেকে পূজোর সময় পাঁচগাঁওয়ে আসেন। তিনি এসে যথারীতি শারদীয় দূর্গা পূজার আয়োজনে নিয়োজিত থাকেন।

মুক্তিযুদ্ধ, সিঁথি রক্ষা ১৩৭৭ বাংলার শেষ দিকে জনৈক ভক্ত প্রদত্ত রূপার তৈরী ৮০ ভরি ওজনের একটি মুকুট, রূপার তৈরী একটি চরণপদ্ম, সোনার চুড়ি, সোনার নোলক ও সোনার আংটি লুন্ঠিত হয়। কেবলমাত্র কুমারীর মাথার সোনার সিঁথিটা রক্ষা পায়। যে মানুষ মুকুটসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়েছিল পরবর্তীতে তার মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে সে মারা যায়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে শান্তি বাবু কুমারী দেবীর সিঁথি কূলপুরোহিত স্বর্গীয় রাজিব ভট্টাচার্য্যরে নিকট রেখে ভারতে চলে যান। যুদ্ধে রাজিব ভট্টাচার্য্যরে সমস্ত সম্পত্তি ধ্বংস হয়। কিন্তু সিঁথি তিনি বুকের মধ্যে আগলে রাখেন। শান্তিবাবু দেশে ফিরলে রাজিব ভট্টাচার্য্য সিঁথিটি সমঝাইয়া দেন। শান্তিবাবুর বাড়ীঘর পাকিস্তানী হিংস্র হায়েনারা জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়। কিন্তু দূর্গামন্ডপ রাসায়নিক দ্রব্য দিয়েও পোড়াতে পারেনি জানোয়ার হায়েনারা। নরপিশাচ পাক-হানাদার বাহিনীর অপচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

অগণিত মানুষের ঢল এবং বলি হবে যথারীতি এবারও বলি অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবৎসর পাঁচগাঁও দূর্গামন্ডপ লাখো লাখো মানুষের মিলন মেলায় মুখরিত হয়। দেশ-বিদেশ থেকে ভক্তরা আসেন মায়ের শ্রীচরণে প্রণাম দেবার বাসনায়। পূজো উপলক্ষ্যে পাঁচগাঁওয়ে বর্ণাঢ্য মেলা বসে। পূজোয় পাঁচগাঁও বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়। সর্বস্তরের মানুষের পদচারণায় দূর্গোৎসব হয়ে উঠে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার সম্মিলনে। ‘শাশ্বতী’ নামে প্রতি বছরই একটি সাহিত্য সংকলন পাঁচগাঁও থেকে প্রকাশিত হয়। ‘শাশ্বতী’ ইতিমধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সারা পৃথিবীতেই আজ এক অস্থিরতা বিরাজ করছে। সেই অস্থিরতা আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশকেও আঁকড়ে ধরেছে। এমনি এক দুঃসময়-দুর্দিনে মহামায়া, জগজ্জননী ও দূর্গতিনাশিনী দেবী দূর্গা মা এসেছেন এবার পূজো নিতে। আমরা প্রত্যাশা রাখছি মহামায়ার আগমনী ধ্বনিতে সকল অস্থিরতা, সংকট ও সংঘাতের পতন হবে। সমস্ত পৃথিবীতেই সুখ-শান্তির আলোয় মাতোয়ারা হবে মানুষের মন-প্রাণ। মানুষ শুধু ভালোবাসাতেই বেঁচে থাকবে চিরকাল। মহিষাসুরদের নশ্বর হাতের কালো থাবা হতে দশভূজা বাঁচাবেন সমগ্র মানব জাতিকে। সারা বিশ্ব জুড়ে নেমে আসুক শান্তির সু-বাতাস।

লেখকঃ সাধারন সম্পাদক,বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ উপজেলা শাখা,হবিগঞ্জ।
ই-মেইলঃ [email protected]





উপ সম্পাদকীয় এর আরও খবর

পার্বত্য চুক্তির ২৭ বছর : শান্তি চুক্তি পাহাড়ে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ পার্বত্য চুক্তির ২৭ বছর : শান্তি চুক্তি পাহাড়ে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ
একেএম মকছুদ আহমেদ এর সাংবাদিকতায় ৫৫ বছর :  গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ, হামলা ও হুমকি বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থি একেএম মকছুদ আহমেদ এর সাংবাদিকতায় ৫৫ বছর : গণমাধ্যমের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ, হামলা ও হুমকি বৈষম্যবিরোধী চেতনার পরিপন্থি
পার্বত্য চুক্তির ২৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ কি-কি বৈষম্যের স্বীকার তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা পার্বত্য চুক্তির ২৬ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ কি-কি বৈষম্যের স্বীকার তা নিয়ে একটি পর্যালোচনা
আন্তর্বর্তীকালিন সরকার পাহাড়ের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিলে নিতে হবে গভীর বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে আন্তর্বর্তীকালিন সরকার পাহাড়ের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিলে নিতে হবে গভীর বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে
সবকিছু কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার আওয়ামীলীগ সবকিছু কেড়ে নিয়েছে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার আওয়ামীলীগ
রাঙামাটিতে ঐক্যবদ্ধ বড়ুয়া সমাজ গড়ে তোলার সম্ভবনার পথ দেখা দিয়েছে রাঙামাটিতে ঐক্যবদ্ধ বড়ুয়া সমাজ গড়ে তোলার সম্ভবনার পথ দেখা দিয়েছে
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৯০০ সালের রেগুলেশান, (সংশোধিত) ১৯২০ আইনটি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পরিপন্থি নয় কি ? বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৯০০ সালের রেগুলেশান, (সংশোধিত) ১৯২০ আইনটি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পরিপন্থি নয় কি ?
আগামীতে  কারা দেশ চালাবে ? …সাইফুল হক আগামীতে কারা দেশ চালাবে ? …সাইফুল হক
সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে

আর্কাইভ