শিরোনাম:
●   মিরসরাইয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত ●   রাউজানে ভূমিদস্যুরা অবৈধভাবে জায়গা দখলের অভিযোগ ●   রাঙামাটিতে উদ্যম যুব ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   অস্বাভাবিকভাবে ভ্যাট ও কর আরোপের গণবিরোধী ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন ●   রাঙামাটির কাউখালিতে তিনটি অবৈধ ইটভাটা বন্ধের অভিযান ●   নবীগঞ্জে সেনাবাহিনীর অভিযানে ২ মাদক ব্যবসায়ী আটক ●   ঈশ্বরগঞ্জে মাদক সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ গ্রেফতার-৪ ●   কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয়ের রুবি জয়ন্তীতে ২ দিনব্যাপী বর্নাঢ়্য আয়োজন ●   ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর ইউপিডিএফের রিপোর্ট ●   রাবিপ্রবি’র ভিসি হিসেবে ড. আতিয়ার রহমান এর যোগদান ●   ভারতের তীর্থ মেলায় বাংলাদেশের জনসাধারনকে নিষেধাজ্ঞা ●   পথচারীকে বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু ●   জাতীয় নির্বাচনের মূল কর্তব্য থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোন সুযোগ নেই ●   এআই ভিত্তিক বিশ্বের জন্য তরুনদের প্রস্তুত করতে হবে : চুয়েট ভিসি ●   কবি এ কে সরকার শাওনের প্রথম উপন্যাস “অতল জলে জলাঞ্জলি” প্রকাশিত ●   নবীগঞ্জে পাহাড় কাটার দায়ে এক্সেভেটর ও ট্রাকসহ আটক-৪ ●   মিরসরাইয়ে চুরি করা ডিজেলসহ চোর গ্রেফতার ●   ভরাট হওয়া রাউজান খাল এখন কৃষকের গলার কাঁটা ●   ঈশ্বরগঞ্জে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার-১১ ●   কুষ্টিয়ায় উৎসাহ সংগঠনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   রাবিপ্রবির নতুন ভিসি ড. আতিয়ার রহমান ●   নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কাছে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের ১১টি নির্বাচন সংস্কার প্রস্তাবনা ●   রাঙামাটির ডিসি ও এডিসির বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগের পরামর্শে কাজ করার অভিযোগ ●   পানছড়িতে ৩২বিজিবির পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   মিরসরাইয়ে শীতার্তদের মাঝে শীত উপকরণ বিতরণ ●   রাবিপ্রবিতে ভিসি নিয়োগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের রাঙামাটিতে সড়ক অবরোধ : ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম ●   গাজীপুরে নাগরিক ঐক্যের কার্যালয়ে বিএনপির নেতৃত্বে অগ্নিসংযোগ ও হামলার নিন্দা জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ ●   ঈশ্বরগঞ্জে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৪ নেতা আটক ●   বেদে সম্প্রদায় ঝাড়ফুক দিয়েই চলে জীবন সংসার ●   তরুণ সংঘের উন্মুক্ত নক আউট ফুটবল টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণী
রাঙামাটি, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
শুক্রবার ● ১০ জানুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর ইউপিডিএফের রিপোর্ট
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর ইউপিডিএফের রিপোর্ট
শুক্রবার ● ১০ জানুয়ারী ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর ইউপিডিএফের রিপোর্ট

--- ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) এর প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের নিরন চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) এর মানবাধিকার পরিবীক্ষণ সেল ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রমে মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।

আজ শুক্রবার ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ থেকে সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই রিপোর্ট প্রকাশের বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম হলো মানবাধিকার লঙ্ঘনের মৃগয়া ক্ষেত্র। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর গত ৫৩ বছরে এ অঞ্চলে ডজনের অধিক গণহত্যা চালানো হয়েছে। ১৯৯৭ সালের বহুল প্রচারিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পরও মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ হয়নি। বস্তুত এই চুক্তিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কোনকিছু উল্লেখ করা হয়নি। ফলে এখনো বিচার বহির্ভুত হত্যা, গ্রেফতার, ধর্ষণ, একটি বিশেষ জনগোষ্ঠীকে নিশানা করে সাম্প্রদায়িক হামলা, ভূমি বেদখলসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অহরহ ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়।
বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রামের মানবাধিকার পরিস্থিতির একটি বিশেষত্ব হচ্ছে নিপীড়িত-নির্যাতিত অধিকারহারা জুম্ম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে শাসকগোষ্ঠি কর্তৃক রাষ্ট্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি নব্যমুখোশ বাহিনীর মতো সশস্ত্র ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর ব্যবহার। এদের মাধ্যমে আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও তাদের সমর্থকদের খুন, গুম, অপহরণ করে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা জুড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। পতিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে এই ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী সৃষ্টি করা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমান অন্তর্বতীর্কালীন সরকারের আমলেও তা বলবৎ রাখা হয়েছে। এই সরকার হাসিনার পতনের আগে খুনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তের জন্য জাতিসংঘকে জড়িত করলেও, পার্বত্য চট্টগ্রামে ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে সংঘটিত অসংখ্য খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিদের ন্যায়বিচার পাওয়া নিশ্চিত করতে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। শুধু তাই নয়, ব্যাপক জনগণের দাবি সত্বেও ইউনূস সরকার হাসিনার আমলে সৃষ্ট ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ভেঙে দেয়নি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে অঘোষিত সেনাশাসন তুলে নিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। অতীতের মতো বর্তমানেও ঠ্যাঙাড়েদেরকে রাজনৈতিক দমনপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীর তালিকায় যোগ হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) সন্তু গ্রুপ, যার সশস্ত্র সদস্যরাও খুন ও অপহরণসহ প্রায় সময় সাধারণ জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে যেসব ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে সেগুলো হলো বিচার বহির্ভূত হত্যা, গ্রেফতার, শারীরিক নির্যাতন, তল্লাশি-হয়রানি, সাম্প্রদায়িক হামলা, অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, ভূমি বেদখল ইত্যাদি। প্রধানত ইউপিডিএফকে লক্ষ্যবস্তু করে রাষ্ট্রীয় বাহিনী এসব নিবর্তনমূলক কার্যক্রম চালিয়ে থাকে। তবে গত বছর সবচেয়ে বেশি রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বান্দরবানে বসবাসরত সংখ্যালঘু বম জনগোষ্ঠি। ব্যাংক ডাকাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ দমনের নামে বম জনগোষ্ঠির উপর অবর্ণনীয় দমন-পীড়ন শুরু হয়, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

রিপোর্টে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাবলী তুলে ধরে বলা হয়, গত বছর পার্বত্য চট্টগ্রামে রাষ্ট্রীয় বাহিনী, পিসিজেএসএস (সন্তু), ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী, সেটলার ও অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত কর্তৃক বিচার বহির্ভুত হত্যার শিকার হয়েছেন ৪৩ জন, রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক আটক বা গ্রেফতারের শিকার হয়েছেন ১৮৫ জন (বম জাতিসত্তার নারী-পুরুষ-শিশু, ইউপিডিএফ সদস্য ও সাধারণ লোকজনসহ); শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২২ জন; বেআইনি তল্লাশি চালানো হয়েছে ২২ গ্রামবাসীর বাড়িতে; হয়রানিমূলক ঘটনা ঘটেছে ১১টি; জেএসএস(সন্তু) ও ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী কর্তৃক অপহরণের শিকার হয়েছেন ৩৮ জন; সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে ৪টি, এতে ৪ জন পাহাড়ি প্রাণ হারান; সেটলার বাঙালি কর্তৃক বিভিন্ন সহিংস ঘটনা ঘটেছে ৬টি; ভূমি বেদখলের ঘটনা ঘটেছে ৯টি স্থানে; গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপের (রাষ্ট্রীয় বাহিনী-জেএসএস(সন্তু)-ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী কর্তৃক) ঘটনা ঘটেছে ১৯টি এবং যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৮ জন নারী-শিশু।

রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য তুলে ধরে রিপোর্টে বলা হয়, ২০২৪ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ২১ জন, যারা ছিলেন সবাই বম জনগোষ্ঠির লোক; আটক বা গ্রেফতারের শিকার হয়েছেন বম জাতিসত্তার নারী-পুরুষ-শিশু, ইউপিডিএফ সদস্য ও সাধারণ লোকজনসহ অন্তত ১৮৫ জন, যাদের মধ্যে ৩৭ জনকে হয়রানির পর ছেড়ে দেওয়া হয় এবং ৩ জন আদালত থেকে জামিনে মুক্তিলাভ করেন; শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২২ জন; বেআইনি তল্লাশি চালানো হয়েছে ২২ গ্রামবাসীর বাড়িতে; হয়রানিমূলক ঘটনা ঘটেছে ১১টি এবং গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ১৪টি।
এছাড়া খাগড়াছড়ির পানছড়ি এলাকায় এক বাগানচাষীর বাগান থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য কর্তৃক বরই (কুল) লুটে নেওয়া এবং লক্ষীছড়ির বর্মাছড়ি এলাকা থেকে জনসাধারণের বিক্রির জন্য রাখা কাঠ জব্দ করে এলাকার লোকজনকে ভাতে মারার হুমকি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে বান্দরবানে যৌথবাহিনীর অভিযানের কারণে নিরাপত্তাহীনতায় বম জাতিসত্তার অন্তত ২শ’ লোক বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে ভারতের মিজোরামে গিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

পিসিজেএসএস (সন্তু)-এর মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য তুলে এতে বলা হয়, জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস বা জেএসএস) সন্তু গ্রুপও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত। গত বছর সন্তু গ্রুপের সদস্যরা ইউপিডিএফ সদস্যসহ ৯ জনকে হত্যা করে, ১ জনকে হত্যার চেষ্টা চালায়, ২১ ব্যক্তিকে অপহরণ ও মারধর করে, পিসিপি কর্মীদের ওপর ২টি হামলা চালায়, ৩টি ক্ষেত্রে হুমকি-ধমকি দেয় ও ৪টি ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করে। এছাড়া ‘সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’ নামে ছাত্রদের একটি প্লাটফর্মের গায়ে নানা তকমা লাগিয়ে দিয়ে তাদের গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে সন্তু গ্রুপের বিরুদ্ধে।

রিপোর্টে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মদদপুষ্ট ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীদের ব্যবহার করে খুন, গুম, অপহরণসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। ২০২৪ সালে ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের হাতে ইউপিডিএফ সদস্যসহ ১১ জন খুন হয়। এছাড়া তারা ১৭ জনকে অপহরণ করে, এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা চালায়, এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে ও একটি সমাবেশে যোগ দিতে লোকজনকে বাধা দেয়। খাগড়াছড়িতে শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠানে ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া গুলতির আঘাতে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের এক নেত্রী গুরুতর আহত হন। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে বছরজুড়ে বিভিন্ন স্থানে জোরপূর্বক চাঁদাবাজি, লুটপাট, হুমকি-ধমকি প্রদান ও সশস্ত্র তৎপরতা চালিয়ে জনগণকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ রয়েছে। বরাবরের মতো প্রশাসন এসব ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনগত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
¬¬¬¬¬
সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা তুলে ধরে রিপোর্টে বলা হয়, গত বছর পাহাড়িদের বিরুদ্ধে বড় আকারের ৪টি সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য ও সেটলার বাঙালিদের একটি অংশ এই হামলার সাথে জড়িত। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও ড. ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের অব্যবহিত পরে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা, খাগড়াছড়ি সদর ও রাঙামাটিতে পাহাড়িদের ওপর সংঘটিত এসব হামলায় ৪ জন পাহাড়ি প্রাণ হারান, শতাধিক আহত হন এবং পাহাড়িদের কয়েকশ’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-ঘরবাড়ি-উপসনালয়ে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হয়।
এছাড়াও সেটলার বাঙালিরা আরো বেশ কিছু সহিংস ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে। যেমন তাদের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তিকে হত্যা, ১ জনকে আহত ও অপর ১ জনকে মারধর করা, পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো এবং সাম্প্রদায়িক হামলায় উস্কানি ও গ্রাফিতি অঙ্কনে বাধা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভূমি বেদখলের ঘটনাবলী তুলে ধরে রিপোর্টে বলা হয়, ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্তত ৯টি স্থানে ভূমি বেদখল ও বেদখল চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সেটলার বাঙালি (৪টি স্থানে), সেনাবাহিনী (১টি স্থানে) ও ভূমিদস্যু ও একটি বেসরকারি কোম্পানি (৪টি) জড়িত। বান্দরবানের লামায় একটি ত্রিপুরা পাড়ায় ভূমিদস্যুদের পোষ্য দুবৃর্ত্তরা অগ্নিসংযোগ করলে পাড়াবাসীদের ১৭টি বসতবাড়ি সম্পূর্ণ ভষ্মীভূত হয়। এছাড়া ভূমি বেদখলের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রীয় বাহিনী বিভিন্ন স্থানের স্থানীয় নাম পরিবর্তন করে মুসলিম নামকরণ করে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত ভূমি বেদখল ও বেদখল প্রচেষ্টার ঘটনা ঘটলেও ভুক্তভোগী ভূমি মালিকরা সরকার ও প্রশাসনের কাছে কোন প্রতিকার পায় না। উপরন্তু স্থানীয় সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তারা ভূমি বেদখলকারী সেটলার ও ভূমিদস্যুদের পক্ষাবলম্বন করে থাকে। এর ফলে পাহাড়িদের পক্ষে বেদখলকৃত জমি উদ্ধার করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া ভূমি বেদখলের বিরুদ্ধে যাতে জনগণ প্রতিবাদ করতে না পারে তার জন্য রাষ্ট্রীয় বাহিনী নানাভাবে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে থাকে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।

নারী নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরে রিপোর্টে বলা হয়, ২০২৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে ৮ জন নারী ও শিশু যৌন সহিংসতা-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩ জন, ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছেন ৪ জন ও অপহরণের শিকার হয়েছেন ১ জন। মূলত সেটলার বাঙালিরাই এসব ঘটনার সাথে জড়িত, তবে একটি ক্ষেত্রে জেএসএস সন্তু গ্রুপের সদস্যের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রামগড়ে সংঘটিত সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাটি বেশ আলোচিত হয় এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে পুলিশ অভিযুক্ত ৩ ধর্ষককে গ্রেফতার করে।
অন্যদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রামে বহুল আলোচিত নারী নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহরণ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি আদালত খারিজ করে দিয়ে অভিযুক্ত লে. ফেরদৌস গংদের দায়মুক্তি প্রদান করে। আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সংগঠিত হলেও এখনো রায়টি বাতিল করা হয়নি।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে কল্পনা চাকমা রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলাধীন নিউ লাল্যাঘোনা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে সেনা কর্মকর্তা লে. ফেরদৌস গং কর্তৃক অপহরণের শিকার হয়েছিলেন। উক্ত ঘটনায় তার বড় ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।





আর্কাইভ