রবিবার ● ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » মিরসরাইয়ে বিএনপি-স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা খুন : স্থানীয় নেতাকর্মীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করলো তদন্ত কমিটি
মিরসরাইয়ে বিএনপি-স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা খুন : স্থানীয় নেতাকর্মীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করলো তদন্ত কমিটি
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: মিরসরাইয়ে বিএনপির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও খুনের ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়াকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে ৫ দিনের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মিরসরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আমিন, সদস্য আবদুল আউয়াল চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী সহ উপজেলা বিএনপি, মিরসরাই ও বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন তদন্ত কমিটির প্রধান ওয়াদুদ ভূঁইয়া। এসময় কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মনিরুল ইসলাম ইউসুফ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আফসার চেয়ারম্যান, আজিজুর রহমান চৌধুরী, মিরসরাই পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক মহি উদ্দিন, বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির সাবেক আহবায়ক মাঈন উদ্দিন লিটন, সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন কমিশনার, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সরোয়ার উদ্দিন সেলিম, উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক সরোয়ার হোসেন রুবেল, সদস্য ফরহাদ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আরেক যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান সহ তার গ্রুপের নেতাকর্মীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করবে তদন্ত কমিটি।
জানা গেছে, মিরসরাই উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল সহ অঙ্গসংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে দু’টি গ্রুপে বিভক্ত। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক নুরুল আমিন ও আরেক যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান দুটি গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর মিরসরাইতে বিএনপির দু’টি গ্রুপে আধিপত্য বিস্তার এবং জামায়াতের সাথে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। গত ৩১ আগষ্ট মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে এসকিউ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তৈরির নির্মাণাধীন একটি কারখানার সামনে ডাকাত আখ্যা দিয়ে সাহেরখালী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রফিককে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আরও সাতজন আহত হন। ডাকাতির নাটক সাজিয়ে পরিকল্পিতভাবে রফিককে হত্যা করা হয়েছিলো বলে দাবি করেন বিএনপি নেতারা। এছাড়া গত ১৩ জানুয়ারি রাতে মিরসরাই স্টেডিয়ামে চলা বাণিজ্য মেলায় ছাত্রদল যুবদলের সংঘর্ষে মিরসরাই পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক কামরুল হাসানের অনুসারীদের হামলায় ছুরিকাঘাতে জাহেদ হোসেন মুন্না (২২) ঘটনাস্থলে নিহত হন। তিনি মিরসরাই পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়কের দায়িত্বে ছিলেন। সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় সোমবার রাতেই মামলা দায়ের (নং-৮) করেন জাহেদ হোসেন মুন্নার ভগ্নিপতি আরাফাত হোসেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে মিরসরাই পৌরসভা যুবদলের আহবায়ক কামরুল হাসানকে গ্রেফতার করেন। দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় গত ১৪ জানুয়ারি কামরুল হাসানকে যুবদলের সদস্য পদ সহ মিরসরাই পৌরসভা সভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার করেছে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। এছাড়াও মিরসরাইয়ে সম্প্রতি ঘটা বিভিন্ন সংঘর্ষের ঘটনাকে তদন্তে গুরুত্ব দিচ্ছে কেন্দ্র কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির প্রধান ওয়াদুদ ভূঁইয়া বলেন, মিরসরাই উপজেলা বিএনপি দু’টি গ্রুপে বিভক্ত। সম্প্রতি এ উপজেলায় বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই জন নেতা খুনের ঘটনা ঘটেছে। খুনের ঘটনা তদন্তে আমাকে প্রধান করে এক সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি। ৫ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, প্রশাসন, বিভিন্ন পেশাজীবিদের সাথে আমি কথা বলবো। অনেকে পরিচয় গোপন রেখেও গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য দিয়েছে। সব পক্ষের সাথে কথা বলে শীঘ্রই আমি রিপোর্ট জমা দেবো।