

শুক্রবার ● ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » কুষ্টিয়ার চরমপন্থী নেতা আতিয়ার খাঁকে হত্যা করল তৃতীয় পক্ষ ফাঁসল ২য় পক্ষ -পর্ব ১
কুষ্টিয়ার চরমপন্থী নেতা আতিয়ার খাঁকে হত্যা করল তৃতীয় পক্ষ ফাঁসল ২য় পক্ষ -পর্ব ১
কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :: এক সময়ের নিষিদ্ধঘোষিত চরমপন্থী কমিউনিষ্ট পার্টি ও পরবর্তীতে দল পরিবর্তন করা জাসদ নেতা আতিয়ার খাঁকে (৬৫) কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। পূর্ব শত্রুতা ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার ছেলে। গত সোমবার সকাল ৭টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের জোতপাড়ার মাঠে তার রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। নিহত আতিয়ার সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের জোতপাড়া এলাকার মৃত ঝড়ু খাঁর ছেলে। আতিয়ারের বড় ছেলে লিটন জানান, বাড়ির জমি নিয়ে প্রতিবেশী আজাদ, রানা, আমজাদের সঙ্গে বিরোধ চলছিল আমাদের সাথে। এ ঘটনার জের ধরে গত এক মাস আগে আমাদের পরিবারের সদস্যদের মারপিট করেন প্রতিপক্ষের লোকজন এবং বাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করি। এরপর রানাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে আমার পিতা আতিয়ার ও আমাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি ধামকি দেন। এ ঘটনার জের ধরে আমার পিতা আতিয়ারের মাথায় কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের আজাদ, রানা, আমজাদ ও তাদের লোকজন। রবিবার দিবাগত রাতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের জোতপাড়ার মাঠে তাকে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়। কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আলিম বলেন, মৃত আতিয়ারের বড় ছেলে লিটন বাদী হয়ে ১৯ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কে এই আতিয়ার খাঁ ? এ বিষয়ে গত দু’দিনের অনুসন্ধানে মিলেছে লোমহর্ষক তথ্য। এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি নিষিদ্ধঘোষিত চরমপন্থী কমিউনিষ্ট পার্টির একজন নেতা ও অস্ত্রধারী ক্যাডার ছিলেন। তার হাতে অনেক নিরীহ মানুষের প্রাণ ঝরেছে, কত মায়ের বুক খালি করেছে এই আতিয়ার খাঁ, তার হিসাব নেই। জোত পাড়া, বংশীতলা সহ আশ পাশের অনেক এলাকার মানুষের হাতে তার জীবন গেছে। এই আতিয়ার খাঁ ছিলেন এক ত্রাশ, ৯০-৯৫ দশকের দিক থেকেই তিনি যুক্ত ছিলেন নিষিদ্ধঘোষিত চরমপন্থী কমিউনিষ্ট পাটিতে, পরবর্তীতে যুক্ত হন জাসদ গণবাহিনীর সাথে। তার সখ্যতা ছিল সাবেক ফ্যাসিবাদী সরকারের মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সাথে। তার ছেলে এখন বলছেন যে, আমার বাবা বিএনপি করতো। জাসদ নেতা কাজী আরেফ হত্যা থেকে শুরু করে উক্ত এলাকায় তৎকালীন সময়ে পথে ঘাটে অলিতে গলিতে যত লাশ পড়ে থাকতো এসব তার এবং তার বাহিনীদের কাজ ছিল। এক সময় কুষ্টিয়া ছিল মৃত্যুপূরী, সেই মৃত্যুপূরীর খলনায়ক ছিলেন এই আতিয়ার খাঁ। আতিয়ার খাঁ দীর্ঘ বিশ বছর কোথায় ছিলেন ? ক্রসফায়ারে একের পর এক সন্ত্রাসী মারা পরতে শুরু করলো তখন এই আতিয়ার খাঁ গা ঢাকাদেয়। চলে যায় ঢাকায় ফ্যাসিবাদী সরকারের মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কাছে। ইনুর তার প্রতিষ্ঠানে চাকরী দিয়ে আত্বগোপনে রেখেছিল। তবে মাঝে মধ্যেই গ্রামে আসতেন তিনি, নতুন করে দলও তৈরী করেছিল। ইউপি নির্বাচন ও সংসদ নির্বাচনের মাঠে একটি দলের পক্ষ নিয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা করেছেন তিনি। এলাকাবাসীর ধারনা সামান্য জমি জমাকে কেন্দ্র করে তিনি খুঁন হয়নি, এলাকায় একটি তৃতীয় পক্ষ আছে তারা জোতপাড়া, বংশীতলা নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নিতেই মাছের তলে মাছ ভেজেছেন। তবে এলাকার সূশীল সমাজ দাবী করে বলেন, নিহত আতিয়ার খাঁ হত্যার পেছনের মাষ্টারমাইন্ড তৃতীয় পক্ষকে খুঁজে বের করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানিয়েছেন। কারন তার অতীত ইতিহাস ঘাটলেই বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল। তারা এটাও বলেন, যাদের নামে মামলা দিয়েছে তারা কেহই এই হত্যা কান্ডের সাথে জড়িতনা। এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। হত্যার সঙ্গে প্রকৃত জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।