শুক্রবার ● ৬ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন কাল লড়াই হবে ত্রিমুখী : ঝুকিঁপূর্ণ ৫৬টি কেন্দ্র
বিশ্বনাথে ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন কাল লড়াই হবে ত্রিমুখী : ঝুকিঁপূর্ণ ৫৬টি কেন্দ্র
মোঃ আবুল কাশেম,বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: (২৩ বৈশাখ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.২০মিঃ) ৭ই মে শনিবার রাত পোহালেই সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ সব ঠিক থাকলে নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে চারটিতে লড়াই হবে ত্রিমূখী এবং দু’টিতে চতুর্থমূখী৷ একাধিক ইউনিয়নে আ.লীগ-বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় জয়ী হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বিএনপির৷ তবে স্বতন্ত্র দু্ই-একজন প্রার্থী চমক দেখাতে পারেন এমটাই মনে করছেন এলাকাবাসী৷ ভোটরদের মন জয় করতে শেষ মূহুর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থী-সমর্থকরা৷ বিজয় মালা ছিনিয়ে নিতে চেষ্টার কমতি ছিলনা প্রার্থীদের৷ বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শেষ হচ্ছে প্রচার-প্রচারণা৷ পবিত্র এই আমানত প্রদান করতে প্রার্থীদের যোগ্যতা ও ব্যক্তিত্ব নিয়ে হিসেব কষছেন সচেতন ভোটাররা৷ নির্বাচন শান্তিপুর্ণ ও নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছয় সত্মরের নিরাপত্তা বলয় তৈরির করা হয়েছে৷ ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে৷ তবুও সাধারণ মানুষদের মনে শংকা দেখা দিয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে৷ যদিও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ছিল শান্তিপূর্ণ৷ নির্বাচনকে সামনে রেখে সুবিধাভোগীরা নানা কৌশলে কতিপয় প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে৷ অভিযোগ রয়েছে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে একাধিক প্রার্থী নির্বাচনী ব্যয় সীমা লংঘন করেছেন৷ শেষ মুহুর্তে পরাজয় ঠেকাতে টাকা বিলিয়ে ভোট আদায়ের অপচেষ্ঠা করছেন৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬টি ইউনিয়নের ৬৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৫৬টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে৷ এর মধ্যে ২৮টি কেন্দ্রকে অধিক ঝুঁকিপুর্ণ হিসেবে তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে৷
জানা গেছে, উপজেলার ৬ইউনিয়নে আ’লীগ-বিএনপি, জাতীয় পার্টি, আ’লীগ-বিএনপি’র বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্রসহ ২৭জন চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন৷
১নং লামাকাজি ইউনিয়নে আ’লীগ-বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত সমর্থিতসহ চারজন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন৷ কবির হোসেন ধলা মিয়া (ধানের শীষ), ডা: শানুর হোসাইন (নৌকা), এ.কে.এম দুলাল (লাঙ্গল)’র মধ্যে ত্রি-মুখী লড়াইয়ের আবাস পাওয়া গেছে৷ লামাকাজীতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকায় রয়েছে-সিরাজপুর জুনিয়র মাদ্রাসা, মুন্সিরগাঁও, ভুরকি, হাজরাই আতাপুর, আকিলপুর, মির্জারগাঁও, দিঘলী, লামাকাজি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পঞ্চগ্রাম রেজি: প্রাথমিক বিদ্যালয়৷
২নং খাজাঞ্চী ইউনিয়নে আ’লীগ-বিএনপি, জাতীয় পার্টি আ’লীগের বিদ্রোহী ও জামায়াত সমর্থিত পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন৷ নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী (চশমা), শংকর চন্দ্র ধর (নৌকা) ও গিয়াস উদ্দিন (ধানের শীষ)’র মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্ধিতার আবাস পাওয়া গেছে৷ খাজাঞ্চীতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকায় রয়েছে-কান্দিগ্রাম, বাওনপুর, ছৈইফাগঞ্জ, চারিগ্রাম, চন্দ্রগ্রাম, জয়নগর, ফুলচন্ডি, বন্ধুয়া, তালিবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, এলাহাবাদ ইসলামিয়া আলীম মাদ্রাসা, আলহাজ্ব লজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয় ও নোয়াগাঁও কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়৷ ৩নং অলংকারী ইউনিয়নে আ’লীগ-বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও বিএনপি’র বিদ্রোহীসহ চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন৷ বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী নাজমুল ইসলাম রুহেল (চশমা), রফিক মিয়া (নৌকা) ও এম.এ হক (ধানের শীষ)’র মধ্যে ত্রি-মূখী লড়াইয়ের আবাস পাওয়া গেছে৷
অলংকারি ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকায় রয়েছে-বড়খুরমা, অলংকারী, রামধানা, শিমুলতলা, রামপুর, ছোট খুরমা, হাজী আব্দুল হামিদ, ঘুরন, টেংরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাজী ইয়াছিন উলস্না উচ্চ বিদ্যালয়৷ ৪নং রামপাশা ইউনিয়নে আ’লীগ ও বিএনপি উভয় দলের বিদ্রোহীসহ চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন৷ আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আজিজুর রহমান (আনারস), বিএনপি বিদ্রোহী বশির আহমেদ (চশমা), আলমগীর হোসেন (নৌকা), জয়নাল আবেদীন (ধানের শীষ)’র মধ্যে চতুর্থমূখী লড়াইয়ের আবাস পাওয়া গেছে৷
রামপাশা ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকায় রয়েছে-আমতৈল (পূর্ব), আমতৈল (পশ্চিম), গড়গাঁও, পুরানগাঁও, একলিমিয়িা, নওধার, দোহাল, রামপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আল-আজম উচ্চ বিদ্যালয়৷
৫নং দৌলতপুর ইউনিয়নে আ’লীগ-বিএনপি, জাতীয় পার্টি আ’লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্রসহ পাঁচজন প্রাথী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন৷ আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আছাব উদ্দিন (আনারস), আমির আলী (নৌকা), আরব খাঁন (ধানের শীষ)’র মধ্যে ত্রি-মূখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে৷ দৌলতপুর ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকায় রয়েছে- সিংরাউলি, সিঙ্গেরকাছ-১, মৌলভীগাঁও, হাবড়া, ধনপুর, দুর্যাকাপন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিঙ্গেরকাছ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও দশপাইকা দাখিল মাদ্রাসা৷
৬নং বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নে আ’লীগ-বিএনপি, আ’লীগ বিদ্রোহী, স্বতন্ত্রসহ চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন৷ আ’লীগ বিদ্রোহী ছয়ফুল হক (আনারস), জালাল উদ্দিন (ধানের শীষ), আব্দুল জলিল জালাল (নৌকা), আব্দুল মতিন (চশমা)’র মধ্যে চতুর্থমুখী লড়াইয়ের আবাস পাওয়া গেলেও বৃহস্পতিবার রাত পর্যনত্ম আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছয়ফুল হক ও ধানের শীষের জালাল এগিয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে৷
বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকায় রয়েছে-শাহজিরগাঁও, ভোগশাইল, জানাইয়া, জনমঙ্গল, ধর্মদা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়, সরম্নয়ালা দৰিণ বিশ্বনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী মফিজ আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়৷
উপজেলা নির্বাচন অফিসার আজিজার রহমান বসুনীয়া বলেন- শানত্মিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণের জন্য আমাদের পৰ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে৷
থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুল হাই বলেন, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচনে ছয় স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে৷ কেউ কোনো বিশৃংঙ্খলা করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে৷