মঙ্গলবার ● ১০ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » বিয়ের দাবিতে ৫ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে কলেজছাত্রীর অবস্থান
বিয়ের দাবিতে ৫ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে কলেজছাত্রীর অবস্থান
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (২৬ বৈশাখ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৪৮মিঃ) ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুঠিদুর্গাপুর গ্রামে বিয়ের দাবিতে পাঁচ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করছে মুক্তি রানী নামে এক কলেজছাত্রী৷ এ নিয়ে প্রেমিক ইমরান হোসেনের পরিবার পড়েছে বিপাকে৷ মুক্তি রানী বিশ্বাস অনার্স দ্বিতীয় বষের্র ছাত্রী ও ইমরান হোসেন কেসি কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স করে বর্তমানে এয়ারটেল কোম্পানিতে চাকরি করছে৷
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, প্রেমিকা মুক্তি রানীর সাফ কথা তাকে বিয়ে না করলে সে ওই বাড়ি থেকে সরবে না৷ এদিকে প্রেমিক ইমরান ও তার বাবা আব্দুল মান্নানও বিষয়টি মেনে নিতে চাচ্ছেন না৷ মুক্তি রানী দাবি করছে প্রেমিক ইমরান হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে, তারা স্বামী স্ত্রীর মতো বসবাস করেছেন৷
এলাকার ইউপি মেম্বার কলিম উদ্দীন জানান, সদর উপজেলার ডেফলবাড়ি গ্রামের সরজিত কুমারের অনার্স পড়ুয়া মেয়ে মুক্তির সঙ্গে ইমরান দীর্ঘদিন ধরে প্রেম করে আসছে৷ প্রেমের সুবাদে গত ৩ বছর ধরে ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই সড়কে জনৈক মুরাদের বাড়িতে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়াও থেকেছে৷ এখন ইমরান স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করছে৷ তিনি আরো জানান, গত বুধবার থেকে মুক্তি রানী ইমরানেদের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করে৷ এলাকার শ’ শ’ মানুষ এ ঘটনা দেখতে কুঠিদুর্গাপুর গ্রামে ভিড় জমায়৷
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ইমরান হোসেন একজন প্রতারক৷ সে একটি কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে প্রলোভন দেখিয়ে ৩ বছর ধরে স্বামী স্ত্রীর মতো বসবাস করেছে৷ এখন বিয়ে করতে টালবাহানা করছে৷
রোববার সকালে বেতাই-চন্ডিপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ তারিফুল ইসলাম পাঁচ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়ীতে অবস্থান করা মুক্তি বিশ্বাসকে পরিবারের হাতে তুলে দিতে গেলে সে তার পরিবারের কাছে যেতে রাজি হননি৷ এই নিয়ে গ্রামে ব্যাপক জনরোষ দেখা দিলে তাকে ঝিনাইদহ সদর থানার হেফাজতে দেওয়া হয়৷ মুক্তি বিশ্বাস জানায়, লম্পট ইমরান প্রথমে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে৷ ঘরবাধার আশ্বাস দিয়ে পরিবারের লোকদের চোখকে ফাকি দিয়ে ঝিনাইদহ শহরে একটি ভাড়া বাড়ীতে বসবাস শুরু করে৷ বিয়ের কথা বললেই আজ নয় কাল, কাল নয় পরশু বলে কালক্ষেপন করতে থাকে৷ এখন সে আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছে না৷ সে আমার সাথে প্রতারণা করেছে৷ এখন আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর পথ নেই৷ সে আমাকে বিয়ে না করলে আমি আত্মহত্যা করবো৷
গ্রামের লোকজন ক্ষেপেছে ইমরান ও তার পরিবারের প্রতি৷ তারা চাই ইমরানের সাথে তার বিয়ে হোক৷ মুক্তির বাবা সরজিত কুমার অভাবের সংসার মেয়ের এই কান্ড লোক জানাজানি হলে তার ও সমাজে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে৷ রোবার সকাল ১১ টার দিকে তাকে থানায় নিলে গ্রামের প্রায় দেড়শত জন লোক থানায় জায়৷ গ্রামের লোকজনের একটায় দাবি ইমরানের সাথে মুক্তি বিশ্বাসকে বিয়ে দিতে হবে৷ এদিকে , মুক্তি রানী বিশ্বাস সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের লোক হওয়ার কারণে ইমরানের পরিবার মুক্তির পরিবারকে দেশ ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে৷
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা ছেলেকে হাতে না পেলে কোন ব্যবস্থায় নিতে পারছি না৷ মেয়ে তার পরিবারের কাছে যেতে রাজি নয়৷ আপাতত ছেলের বাবা আবদুল মান্নান, মা ও খালাতো ভাই নগর বাথান কলেজের প্রিন্সিপাল মো. অলিয়ার রহমান থানা হেফাজতে রয়েছে৷ গ্রামের লোকজন বলে যদি টাকার বিনিময়ে লম্পট ইমরান পার পেয়ে যায় তবে আমরা ছাড়বো না৷