সোমবার ● ১৬ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » তিন পার্বত্য জেলায় দাতা সংস্থা ইউএনডিপি পরিচালিত ২১০ প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ
তিন পার্বত্য জেলায় দাতা সংস্থা ইউএনডিপি পরিচালিত ২১০ প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ
অনলাইন ডেস্ক :: নতুন করে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের ব্যবস্থাপনায় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় পরিচালিত ২১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের আওতায় আসতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই বিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং তিন পার্বত্য জেলার অবশিষ্ট ২১০টি বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য গঠিত কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বেসরকারি ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়েছেন। এর বাইরে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি ছাড়া নতুন কোনো বিদ্যালয় জাতীয়করণের আওতায় আসার সুযোগ কোনোভাবেই নেই। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় দাতা সংস্থা ইউএনডিপির সহায়তায় সিএইচটিডিএফ প্রকল্পের আওতায় ২৩৩টি বিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ২৩টি বিদ্যালয় আগেই জাতীয়করণের আওতায় এসেছে।
দাতা সংস্থা ইউএনডিপি বাকি ২১০টি বিদ্যালয় এখন আর চালাতে চাচ্ছে না। এ অবস্থায় দুর্গম পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন সুবিধা ও অসুবিধার বিষয় বিবেচনা করে এ স্কুলগুলোকে জাতীয়করণ করার বিষয়ে সম্মতির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি প্রস্তাব গত ৮ এপ্রিল পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী এ স্কুলগুলোর বিষয়ে যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত এবং আর্থিক সংশ্লেষ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামতসহ সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠাতে বলেন। সে অনুযায়ী, কাজ চলছে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই বলে জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বিদ্যালয়গুলোর ক্যাচমেন্ট এলাকার মধ্যে অন্য কোনো বিদ্যালয় আছে কি না, ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা, ছাত্রছাত্রী অনুপাতে শিক্ষক সংখ্যা, প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রেণিকক্ষ, পাঠদানের অবস্থা, বিদ্যালয় স্থাপনের যৌক্তিকতা, জমি সংক্রান্ত জটিলতা ইত্যাদি যাচাই করে আর্থিক সংশ্লেষসহ জাতীয়করণের জন্য নির্ধারিত ছক অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। এ প্রতিবেদন পাওয়ার পরই পূর্ণাঙ্গ একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিলেই এ স্কুলগুলো জাতীয়করণ করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সুদত্ত চাকমার নেতৃত্বে ও জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাঠ পর্যায়ের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদন তৈরির কাজ করছেন। অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান জানান, মন্ত্রণালয়ে এ প্রতিবেদন এসে পৌঁছায়নি। তবে তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন প্রতিবেদন তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, ইতোমধ্যে জাতীয়করণের আওতায় আসা পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার ২৩টি বিদ্যালয়ের মধ্যে পাঁচটি দ্বিতীয় ধাপে এবং ১৮টি তৃতীয় ধাপে তালিকাভুক্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি রাজধানীর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে লক্ষাধিক শিক্ষকের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষকসহ দেশের প্রায় ২৬ হাজার ১৯৩টি নিবন্ধিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তিন ধাপে সরকারিকরণের ঘোষণা দিয়েছেন। এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন প্রায় ১ লাখ ৪ হাজার শিক্ষক। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে জাতীয়করণের আওতায় আনার কাজ শেষ হয়েছে।
তৃতীয় ধাপের বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের কাজ চলছে। মো. নজরুল ইসলাম খান জানান, তৃতীয় ধাপের বিদ্যালয়গুলোর যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। এ বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ করে গেজেট প্রকাশ করতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে।
সূত্র : দেশকাল