বুধবার ● ১৮ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » রাঙামাটিতে মৌসুমে কেনা বেচা হচ্ছে দৈনিক কোটি টাকার কাঠাল
রাঙামাটিতে মৌসুমে কেনা বেচা হচ্ছে দৈনিক কোটি টাকার কাঠাল
ষ্টাফ রিপোর্টার :: ছয় ঋতুর বাংলাদেশ, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাস গ্রীষ্মকাল ৷ এই দুই মাস বাংলাদেশে নানা রকম ফলের মৌসুম ৷ আম, লিচু, আনারস, লেবু, জাম্বুরা, কমলা, কলা ও পেয়ারা ইত্যাদি দেশীয় ফল উৎপাদনে পার্বত্য অঞ্চলের রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাঠালের সুনাম দেশব্যাপী ৷ বৈশাখের শেষে জ্যৈষ্ঠে জাতীয় ফল কাঠালের ভরা মৌসুম ৷
সুমিষ্ট ফল কাঠালের উৎপাদন পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়ী জেলা গুলোতে প্রচুর পরিমানে হয় ৷ পাহাড়ী অঞ্চলের ফলের স্বাদ গন্ধ সম্পুর্ণ প্রাকৃতিক ও সুমিষ্ট হওয়ায় এখানকার ফলের চাহিদাও রয়েছে দেশব্যাপী ৷ পার্বত্য অঞ্চলে উৎপাদিত এই ফল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানী হয় রাজধানীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়, যেমন চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, ব্রাম্মনবাড়িয়া, উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ ও সিলেটের বিভিন্ন জেলায় ৷
রাঙামাটি শহরের সবচেয়ে বড় বাজার সমতাঘাট,ফিসারী ঘাট ও ট্রাক টামিনাল ঘাটে কাঠালের বাজার ঘুরে দেখা যায় কয়েক কি.মি এলাকা জুড়ে বিশাল বিশাল আকারের কাঠালের স্তুপ আর পাকা কাঠালের সুমিষ্ট গন্ধে মৌ মৌ করছে পুরো এলাকা ৷ প্রায় একশ জনের মত শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন কাঠাল উঠা নামানোর কাজে,এক এক জন শ্রমিক প্রতি দিন তাদের গড়ে আয় হচ্ছে ৮শত থেকে ১৫ শত টাকা পর্যন্ত ৷ দৈনিক কেনা বেচা হচ্ছে প্রায় এককোটি টাকার কাঠাল ৷ তিন আকারের কাঠালের দামও তিন ধরনের ৷ বড়,মাঝারী ও ছোট, ৷ এত কাঠাল আসছে কোথা থেকে জানতে চাইলে কাঠাল ব্যবসায়ী মো. নুরুল ইসলাম জানান, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার দশটি উপজেলা থেকেই কাঠাল আসছে, তবে নানিয়ারচর, বুড়িঘাট, শুভলং, লংগদু, কাপ্তাই,কাট্টলী, মায়নী ও বরকল এলাকা থেকে বেশী কাঁঠাল আসছে ৷ ছোট আকারের কাঠাল প্রতি শতে বিক্রি হয় ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকায়, মাঝারী তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার আর বড় আকারের কাঠাল বিক্রি হচ্ছে শতে সাত থেকে দশ হাজার টাকায় ৷ আবার গ্রীষ্মেও প্রচন্ড খরায় পানি শুকিয়ে যাওয়াতে বিভিন্ন বাজার থেকে সমতাঘাট কাঠাল বাজার পর্যন্ত পৌঁছতে খরচও কম পরছে না, প্রতি ট্রলারে প্রতি কাঠাল দুই টাকা আর শ্রমিক খরচ প্রতি কাঠালে তিন টাকা বলে জানান ব্যবসায়ীরা ৷ তবে কোটি টাকার কাঠাল বেচাকেনা হলেও সন্তুষ্ট নন ফল চাষীরা ৷ জেলাতে কোন হীমাগার না থাকায় বিক্রি বিলম্ব হলে পঁচে গিয়ে উৎপাদন খরচও লোকসান গুনতে হয় তাই লাভের আশায় না থেকে স্বল্পমুল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে ৷ এদিক থেকে ব্যবসায়ীদের কাছে চাষীরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেন এক কাঠাল চাষী ৷ তিনি বলেন, শুধু কাঠাল নয়- আম, লিচু, আনারস, লেবু, জাম্বুরা, কমলা ইত্যাদি সব ফলের মৌসুমে একই অবস্থা ৷
ফলচাষীদের সবরকম ফলের ন্যায্যমুল্য পাওয়ার জন্য মুল্যের নির্দিষ্ট কাঠামো এবং অবিক্রিত ফল সংরক্ষনের জন্য জেলায় হিমাগার স্থাপন করা হলে চাষীদের উৎপাদিত ফলের সঠিক মুল্যায়ন ও পার্বত্য অঞ্চলের অত্যন্ত সম্ভাবনাময়ী ফলচাষ জেলার অর্থনৈতিতে শুভ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন স্থানীয় চাষী ও ব্যবসায়ীরা ৷