শুক্রবার ● ২০ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » বিশ্বনাথে অবাধে নিধন হচ্ছে মা মাছ
বিশ্বনাথে অবাধে নিধন হচ্ছে মা মাছ
মোঃ আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে গত তিনদিনের মোষলধারে বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন নদ-নদী ও এলাকার নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ এতে জেলে ও সৌখিন মাছ শিকারিরা মাছ ধরতে ব্যসত্ম সময় কাটাচ্ছেন৷ ভোর বেলা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে মাছ শিকার৷ এতে ছোট মাছ অবাধে নিধন করা হচ্ছে৷ এসব মাছ জেলেরা উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করতে দেখা যায়৷ ছোট মাছ নিধন রোধে কার্যকর কো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না৷ এভাবে যদি প্রতিদিন ছোট মাছ নিধন হয়, হারিয়ে যাবে দেশীয় প্রজাতির মাছ৷ দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় চলছে মাছের আকাল৷ দেশী প্রজাতির মাছ রক্ষা করতে ছোট মাছ নিধন বন্ধ করা অতি জরুরী হয়ে পড়েছে বলে উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন৷ উপজেলার বিভিন্ন জায়গা ছোট মাছ নিধন না করার জন্য উপজেলা মত্স্য অফিস থেকে বলা হলেও এর কোনো তোয়াক্কা করছেনা মাছ শিকারিরা৷
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, উপজেলার সদরের নতুন বাজার, পুরান বাজার, হাবড়া বাজার, বৈরাগী বাজার, পীরের বাজার, আমতৈল বাজার, রামপাশা বাজার, লামাকাজি বাজার, মাহতাবপুর মাছের আড়ত্, রাজাগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতিদিন ছোট মাছ ও পোনা মাছ প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে৷ এসব বাজারে কই মাছ, গোয়াল, টাকি মাছ, পুটি মাছসহ বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা পাওয়া যাচ্ছে৷
এলাকার সচেতন মহলের লোকজন জানান, বিগত ১০ বছর আগে উপজেলা মাছের কোনো অভাব ছিল না৷ এখন হাট-বাজারে মাছের বড় আকাল চলছে৷ বছরের অধিকাংশ মাসে দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যায় না৷ মাঝে মাঝে দেশীয় মাছ পাওয়া গেলেও সেগুলো চড়া দামে বিক্রি হয়৷ প্রতি বছর বর্ষার শুরম্নতে নির্বিচারে মা ও পোনা মাছ নিধন এবং হেমন্ত মৌসুমে খাল,বিল,নদী-নালা সেচের মাধ্যমে মাছ ধরার ফলে দিনে দিনে হারিয়ে যেতে বসেছে দেশীয় প্রজাতির মাছ৷
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নদী-খাল-বিল ও ফসলি জমিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকার বিভিন্ন পেশার লোকজন মাছ শিকারে ব্যসত্ম রয়েছেন৷ মাছ শিকার করতে অনেকের হাতে রয়েছে ঠেলা জাল, উড়াল জাল, বেল জাল, চিটকা জাল, বাঁশের তৈরি ডরি৷ এসব মাছ ধরার যন্ত্র দিয়ে বড় মাছের চেয়ে মাছের পোনা নিধন হচ্ছে বেশি৷ মনের আনন্দ অনেকেই মাছ শিকার করতে দেখা যায়৷
এব্যাপারে উপজেলার শ্বাসরাম গ্রামের নূরুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসমে মাছ শিকার করার আনন্দটাই আলাদা৷ তাই মাছ শিকার করে আসছি৷ এসময় মাছের পোনা বেশি পাওয়া যায়৷ পোনা মাছ খেতে ভাল লাগে৷
রামপাশা গ্রামের রিপন মিয়া বলেন,নদ-নদী-খাল-বিলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিন এলাকার লোকজন মাছ শিকার করে আসছেন৷ এতে মাছের পোনা বেশি মারা হচ্ছে৷
স্কুলপড়ুয়া ছাত্র রায়হান আহমদ সায়মন বলেন, বৃষ্টির পানিতে মাছ শিকার করতে ভাল লাগে৷ তাই চাচার সঙ্গে মাছ ধরতে এসেছি৷
উপজেলা সদরের পুরান বাজার মাছ ব্যবসায়ী আবুল মিয়া বলেন, দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া খুব মসকিল৷ মাঝে মাঝে দেশী মাছ পাওয়া গেলেও আড়ত্ থেকে চড়া দামে ক্রয় করে আনতে হয়৷ বর্ষা মৌসমে গ্রামাঞ্চল থেকে ছোট মাছ ক্রয় করে এনে বাজারে বিক্রি পরিবার পরিজন নিয়ে কোনো চলে আসছি৷
উপজেলার লামাকাজি ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া বলেন, গত বৃষ্টির ফলে এলাকার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার পথে৷ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছ শিকার হচ্ছে৷ তবে পোনা মাছ শিকার না করার জন্য এলাকার লোকজন অবহিত করি৷
উপজেলার মত্স্য কর্মকর্তা নির্মল চন্দ্র বণিক বলেন, ইতি মধ্যে উপজেলার কয়েকটি জায়গায় পোনা মাছ নিধন না করার জন্য মৌখিকভাবে বলা হয়েছে৷ তবে খুব শিগগিরই উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হবে৷