সোমবার ● ১২ অক্টোবর ২০১৫
প্রথম পাতা » বিজ্ঞপ্তি » সুন্দরবন রক্ষায় ১৬-১৮ অক্টোবর ঢাকা-সুন্দরবন রোডমার্চ
সুন্দরবন রক্ষায় ১৬-১৮ অক্টোবর ঢাকা-সুন্দরবন রোডমার্চ
সোমবার সকালে তোপখানা রোডে নির্মল সেন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক সুন্দরবন ও দক্ষিণাঞ্চলের প্রাণ-প্রকৃতি জীববৈচিত্র্য বিপন্নকারী রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধের দাবিতে আগামী ১৬-১৮ অক্টোবর ২০১৫ ঢাকা-সুন্দরবন রোডমার্চ এর কর্মসূচী ঘোষণা করেন এবং বলেন জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্যা আর্থ’ পুরস্কারের সম্মান রক্ষায় অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশবিনাশী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধের ঘোষণা দেয়া প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতা মোশরেফা মিশু, মোশাররফ হোসেন নান্নু, এড. আব্দুস সালাম, মানস নন্দি, হামিদুল হক, মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, বহ্নিশিখা জামালী, নজরুল ইসলাম, ফখরুদ্দীন কবির আতিক, শহীদুল ইসলাম সবুজ, আকবর খান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল হক বলেন, দেশের জনগণের মতামত ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগকে উপেক্ষা করে ভারতকে খুশী রাখতে প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবন বিপন্নকারী রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প চালিয়ে যাবার ঘোষণঅ দিয়ে চলেছেন। তিনি একহাতে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার নিচ্ছেন, অন্য হাতে সুন্দরবন তথা দক্ষিণাঞ্চলের প্রাণ, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের জন্য বিপজ্জনক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। সুন্দরবন থেকে সরকারি হিসাবে মাত্র ১৪ কি.মি দূরত্বে অবস্থিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে লক্ষ লক্ষ টন কয়লা পোড়ানো হবে তা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া, ছাই, রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি আশেপাশের বায়ু, পানি, মাটিকে দূষিত করবে। এই দূষণ পানি ও বাতাসের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে সুন্দরবনকে বিপন্ন করবে। বিপুল পরিমান কয়লা বহনকারী জাহাজ আসা-যাওয়া করবে বনের ভেতর দিয়ে। গতবছর শ্যালা নদীতে একটি তেলবাহী জাহাজডুবিতে সুন্দরবনের বিপন্ন দশা আমরা দেখেছি। পৃথিবীর সর্ববহৃৎ ম্যানগ্রোভ বন ও ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ সুন্দরবনের মৃত্যু হলে সারা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হবে। আপনারা অবগত আছেন যে সিডর, আইলা, লবণাক্ততাসহ নানা কারণে দক্ষিণাঞ্চল বিপর্যস্ত। তার ওপর সুন্দরবনের অদূরে এসব বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মিত হলে সুন্দরবনসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
তিনি বলেন, বহুল সমালোচিত এই প্রকল্প নিয়ে ইতিমধ্যে শুধু দেশে নয়, ইউনেস্কো-রামসারসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাও প্রশ্ন তুলেছে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিবেচনায় কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী ব্যাংক ইতিমধ্যে এতে অর্থায়ন না করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। জনসাধারণের সংগঠিত আন্দোলনের চাপেই কেবলমাত্র সরকারকে তার অবস্থান পরিবর্তনে বাধ্য করা সম্ভব। সেই লক্ষ্যে আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আগামী ১৬-১৮ অক্টোবর ঢাকা থেকে সুন্দরবন রোডমার্চের ডাক দিয়েছে। রোডমার্চ চলাকালে পথে পথে জনসভা-পথসভা-মিছিল-প্রচারপত্র বিতরণ-গণসংযোগ-সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হবে। রোডমার্চে ঢাকা থেকে ৫ শতাধিক নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন।
তিনি বলেন, মুষ্টিমেয় লুটেরা গোষ্ঠির স্বেচ্ছাচারীতায় তাদের মুনাফার স্বার্থে দেশের মানুষ বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্য সুন্দরবন যা মায়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে কোটি কোটি মানুষকে আগলিয়ে রেখেছে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবন ও অর্থনীতিকে সচল রেখেছে তাকে কোনভাবেই আমরা নষ্ট হতে দিতে পারি না। দক্ষিণাঞ্চলের প্রকৃতি পরিবেশ ও জীবনবিরোধী এই সর্বনাশা তৎপরতাকে দেশের মানুষ কোনভাবেই বরদাসত করবে না। তিনি আত্মঘাতি এবং বিপদজনক রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধে প্রতিরোধ জোরদার করতে দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আয়োজিত ১৬-১৮ অক্টোবরে ঢাকা-সুন্দরবন রোডমার্চে সামিল হতে, তাকে সফল করতে সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
রোডমার্চের বিস্তারিত কর্মসূচি
১৬ অক্টোবরঃ সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে উদ্বোধনী সমাবেশ- সকাল ১১টায় যাত্রা শুরু- দুপুর ১২টায় সাভার রানা প্লাজার সামনে সমাবেশ-বিকাল ৪টায় মানিকগঞ্জ শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ মাঠে জনসভা-গোয়ালন্দে রাত্রিযাপন।
১৭ অক্টোবরঃ সকাল ৯টায় গোয়ালন্দ থেকে যাত্রা শুরু- সকাল ১০টায় মাগুরায় পথসভা-সকাল সাড়ে ১১টায় ঝিনাইদহে সমাবেশ-বিকাল ৪টায় যশোর টাউন হল মাঠে জনসভা- যশোরে রাত্রিযাপন।
১৮ অক্টোবরঃ সকাল ৯টায় যশোর থেকে যাত্রা শুরু- সকাল ১০টায় নওয়াপাড়ায় সমাবেশ- দুপুর ১২টায় দৌলতপুরে পথসভা- দুপুর ৩টায় খুলনা হাদীস পার্কে জনসভা- বিকাল সাড়ে ৪টায় বাগেরহাটের উদ্দেশ্যে যাত্রা- বিকাল ৫টায় কাটাখালি মোড় (বাগেরহাট) এ সমাপণী সমাবেশ।
(সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)
আপলোড : ১২ অক্টোবর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : সন্ধ্যা ৭.২৫ মিঃ