মঙ্গলবার ● ৭ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » মাটিরাঙ্গায় চুরির দায়ে শিক্ষক রবিউল আটক
মাটিরাঙ্গায় চুরির দায়ে শিক্ষক রবিউল আটক
মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি :: (২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৯.১৪মিঃ) পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গায় চুরির দায়ে গোমতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (সপ্রাবি) প্রধান শিক্ষক মো. রবিউল ইসলামকে আটক করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী ৷
জানা গেছে,পবিত্র রমজান উপলক্ষে সরকারী ভাবে স্কুল বন্ধ থাকলেও ৭ জুন মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির কাউকে না জানিয়ে চুপি চুপি প্রধান শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম ট্রাকে বোঝাই করেন বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের মালামাল ৷
বিষয়টি টের পেলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় এলাকাবাসী তাকে চুরিকৃত মালামাল আর মালবাহী গাড়ীসহ হাতে নাতে আটক করে ৷ আটককৃত গাড়ী নং - রাঙামাটি-ড-০২-০০১৬ ৷ সকাল সাড়ে ৮টার দিয়ে মালামালসহ মো. রবিউল ইসলাম (মাষ্টার) কে আটক করলেও দুপুর ১২টার পর্যন্ত তাকে আইনের হাতে তুলে দেননি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ৷
এ নিয়ে স্থানীয় এলকাবাসীদের মাঝে চলছে নানা গুঞ্জন ৷ কেউ কেউ শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, প্রভাবশালী ও চতুর এই শিক্ষকের বিচার যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে করা না হয় তাহলে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সে আবার অন্যায় কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও তাতে এলাকাবাসীর কিছুই করার থাকবে না ৷
স্থানীয়রা জানান, এই স্কুলে জাতীয় দিবসগুলোতে পতাকা উত্তোলোন করা হয়না ঠিকমতো ৷ যদিও কোন কোন সময় উত্তোলোন করা হয়,তা ২/৩দিনেও নামানো হয় না ৷ প্রধান শিক্ষকের অবহেলার কারণে বিদ্যালয়টিতে পড়াশোনা চলেনা ঠিক মতো, সহকারী শিক্ষিকারা নিজেদের মাথার উকুন বাছাই করান ছাত্রীদের দিয়ে, প্রশংসাপত্র নিতে প্রতিটি ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে ২/৩ শত টাকা আবার অনেকের কাছে ৩ থেকে ৫ শত টাকা পর্যন্ত আদায় করেন অবৈধভাবে ৷ মাসে ২/৩ দিন ছাড়া বাকী দিন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়েই অফিসিয়াল কাজের নামে ব্যক্তিগত কাজেই তিনি বেশীর ভাগ সময় মাটিরাঙ্গা যাতায়াত করেন ৷ নিলামের মালামাল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একবার নিয়ে গেছে নিলাম প্রাপ্তরা ৷ যদি নিলামের মালামাল হতো তাহলে বন্ধের দিনে কেন ? পরিচালনা কমিটিকে না জানিয়ে কেন ? নিলাম বিজ্ঞপ্তির তারিখের সাথে দেখানো মালপত্রের অমিল কেন ? কাগজপত্রে ৯ মাসের মতো সময়ের গরমিল রয়েছে বলে তাত্ক্ষনিক বৈঠকে প্রতিমাণ হয় ৷ এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অভিযোগ দিবো বললে, রবিউল ইসলাম বলেন, এই রকম শিক্ষা অফিসার আমার পকেটে থাকে ৷
এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. এনামুল হক আলীম জানান, বিষয়টি ইতিমধ্যে আমি উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাইমারী শিক্ষা অফিসার কৃষ্ণ লাল দেবনাথকে জানিয়েছি ৷ তার পরামর্শ নিয়ে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করবো ৷
মালামাল নেয়ার বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কৃষ্ণ লাল দেবনাথ জানেন রবিউল ইসলাম এমন দাবী করলেও এ বিষয়টি একেবারেই জানেন না বলে সাফ জানালেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মুঠোফোনে এই প্রতিনিধিকে ৷ তিনি বলেন, নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা নিয়মানুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে নিলামকৃত মালামাল উক্ত এলাকার থেকে সরিয়ে নিতে হবে অবশ্যই ৷ যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না নেয় তা পুনরায় স্কুলের সম্পত্তি নিসেবে বিবেচিত হয়ে পুনরায় নিলামে উঠবে ৷
এ দিকে বিষয়টি জানার পর পর শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ স্কুল এলাকা পরিদর্শন ও অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে স্বাক্ষাত করার খবর পাওয়া গেছে ৷
এ দিকে চুরির দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম জানান, আমি নির্দোষ ৷ প্রশাসনিক নিয়ম মেনেই আমি নিলামের মালামাল হস্তান্তর করছিলাম ৷ উপস্থিত জনতার সামনে তাকে আটকের বিষয়টি তিনি প্রশাসনকে অবহিত করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি সনত্মোষ জনক উত্তর না দিয়ে সংবাদ কর্মীকে অফিসের ভিতরে নিয়ে একা একা কথা বলতে অনুরোধ জানান ৷ এ সময় উত্তেজিত জনতা নানা অভিযোগ করতে থাকেন ৷
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম মাষ্টারকে সোপর্দ্দ করার খবর জানা যায়নি ৷