সোমবার ● ১৩ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » খেলা » সভাপতি মঞ্জুর কাদের কোরাইশী এনএসসি’র মাধ্যমে আমাকে অপসারণ করেছে : উইং কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ (অব.)
সভাপতি মঞ্জুর কাদের কোরাইশী এনএসসি’র মাধ্যমে আমাকে অপসারণ করেছে : উইং কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ (অব.)
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সদ্য বিদায়ী সাধারন সম্পাদক উইং কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ (অব.) সিএইচটি মিডিয়া টুয়োন্টফোর ডটকম অনলাইন গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সভাপতি মঞ্জুর কাদের কোরাইশী আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যেসব খবর সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে প্রচার করছে তা পুরোটাই মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত ৷ আমি এ ঘটনার তিব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সেই সাথে মিডিয়া, এনএসসি, বিওএ এবং সরকারের কাছে বিনীত নিবেদন এই ঘটনার সুষ্ট ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করছি ৷ তার মনগড়া ও সাজানো অভিযোগের মাধ্যে ক্রীড়া কর্তৃপক্ষের কাছে আমার ক্রীড়াঙ্গনে এবং ভারোত্তোলন এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘ ৪১ বছরের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভাবমুর্ত্তি ও সততা প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেডারেশনে তার অনৈতিক কাজ বিনা বাধায় করা যাবে বলে তিনি মিথ্যাচার করে আমাকে এনএসসি’র মাধ্যমে সরিয়ে তার মনমতো নিজের আত্বীয় স্বজন এমনকি তার সহকারীকেও ফেডারেশনের এ্যাডহক কমিটি বানিয়েছে ক্রীড়া পরিষদকে ধোকা দিয়ে৷ বর্তমান কমিটির ২৪ জনের মধ্যে ৮জন বাদে বাকী কেউই ভারোত্তোলন এর সাথে জড়িত নন ৷
এই ঘটনারও তদন্ত হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি ৷
নিচে বর্তমান সভাপতি মঞ্জুর কাদের কোরাইশীর কিছু কর্মকান্ডের বিবরণ তুলে ধরা হলো সবার জানার জন্য ৷
১. মঞ্জুর কাদের কোরাইশী কোষাধ্যক্ষ ছাড়া ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা করতে চান যা গঠনতন্ত্র পরিপন্থী ৷ তিনি ব্যক্তিগত ক্ষমতা দেখিয়ে ফেডারেশনের গত ১৭জানুয়ারী ২০১৫ তারিখের সভায় সকল সদস্যের মতামত উপেক্ষা করে একাই ব্যাংকে গিয়ে ব্যাংক হিসাব শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে পরিচালিত হবে বলে চেক স্বাক্ষরের ক্ষমতা নেন ৷ নীতিগত ভাবে তার এই কাজের সাথে আমার এবং কোন সদস্যের সমর্থন ছিলো না ৷ উল্লেখ্য, বিস্তারিত গত ১৭ জানুয়ারী ২০১৫ সালের সভায় কার্য বিবরনীতে লেখা রয়েছে ৷
২. তিনি আমাকে আলাদাভাবে আরেকটি ব্যাংক একাউন্ট খেলার জন্য প্রস্তাব দেন ৷ যা তিনি ও আমি পরিচালনা করবো ৷ তার সেই অনৈতিক কর্মের প্রস্তাবে আমি সমর্থন করি নাই ৷ উল্লেখ্য, সেই ১৯৭২ সাল থেকে (বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম শাখায়) একটি মাত্র একাউন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশনের অর্থ লেনদেন হয়ে আসছে ৷
তার স্বার্থ হাসিল না হওয়াতে তিনি একটি সংবাদ পত্রের রিপোর্টারকে ম্যানেজকে ফেডারেশনের ব্যাংক একাউন্ট নেই বলে মিথ্যা খবর ছাপায় ৷ অথচ গত ৪৫ বছর যাবত্ একটি মাত্র ব্যাংক একাউন্ট এর মাধ্যমে হিসেব পরিচালিত হয়ে আসছিলো সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ ও সভাপতির স্বাক্ষরে ৷ বিষয়টি এনএসসি ও বিওএসহ সরকারের জানা ৷ যদি একাউন্টই না থাকে তাহলে ফেডারেশন এত দিন চললো কিভাবে ? আর এনএসসি তার অর্থ দিলেন কাকে বা কোন একাউন্টে ৷ বিষয়টি রীতিমত সুস্থ মানুষের কাছে হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই নয় ৷
৩. সভাপিত মঞ্জুর কাদের কোরাইশী বিভিন্ন সময় ফেডারেশনের মাধ্যমে আমাকে তার স্বার্থ সিদ্ধি হয় এমন কাজের পরামর্শ দিতেন ৷ যেন বিদেশে দল পাঠানোর সময় খেলোয়াড়দের সাথে তার একটি লোকের ভিসা করে দিতে বলেন ৷ আমি তাঁকে অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকার কথা বললে তিনি আমার সাথে অশোভন আচরণ করেন ৷
এই ঘটনার স্বাক্ষী :
১. আব্দুল কাদের, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশন ৷
২. ফারুক আহম্মেদ সরকার, প্রশিক্ষক, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ৷
৪. আন্তর্জাতিক এবং এশিয়ান কমনওয়েলথ ফেডারেশনে কংগ্রেস সভায় উপস্থিত থাকার জন্য প্রতি বছর ফেডারেশন থেকে দুই জন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয় ৷ আমি যেহেতু এশিয়ান ভারোত্তোলন ফেডারেশন, কমনওয়েলথ এবং আন্তর্জাতিক ভারোত্তোলন ফেডারেশনের নির্বাচিত বোর্ড মেম্বার এ কারণে আমাকে গত ৪১ বছর যাবত্ সকল আন্তর্জাতিক কংগ্রেসে ও বোর্ড মিটিংয়ে অংশ নিতে হয় ৷ আমার নিজের খরচে এসব জরুরী সভায় যোগ দিয়েছি ৷ কোন সরকারী বা ফেডারেশনের টাকায় আমি কোন কংগ্রেসে অংশ নেয়নি ৷ বার্ষিক অডিট যার প্রমাণ ৷ কিন্তু সভাপতি নিজের টাকায় কংগ্রেসে যাবেন না ৷ তাকে নিয়ে যেতে হবে ৷ তিনি আমাকে প্রায় ভয় দেখিয়ে বলেন তাকে খুশি করতে না পারলে ফেডারেশনে থাকতে পারবো না ৷ তিনি সরকারী দলের লোক ইত্যাদি ৷
এই ঘটনার প্রমাণ :
১. মজিবুর রহমান, সদস্য, বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশন ৷
২. ফারুক আহম্মেদ সরকার, প্রশিক্ষক, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ৷
৫. গত ছয় বছরে সভাপতি মুঞ্জর কাদের কোরাইশী এমপি থাকা অবস্থায় ফেডারেশনের কোন মিটিংয়ে অংশ নেননি ব্যস্ততার অজুহাতে ৷ বর্তমানে তিনি এমপি নন ৷ ফলে মাঝে মাঝে তিনি ফেডারেশনে আসতেন দুই তিনজন তার দলীয় লোক সাথে করে ৷ তাদের দুপুরের খাবারের বিল আমাকে দিতে হতো ৷ অনেক সময় তিনি বিভিন্ন খেলোয়াড় এর কাছে সিগারেট খাওয়ার জন্য ১০ টাকা পর্যন্ত চেয়ে নিতেন ৷
এই ঘটনার স্বাক্ষী :
১. ফারুক আহম্মেদ সরকার, প্রশিক্ষক, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ৷
২. বিদ্যুত্ কুমার রায়, জাতীয় ভারোত্তোলক ৷
৬. গৌহাটি ও শিলং এ অনুষ্ঠিত ১২তম এসএ গেমসে মাবিয়া আক্তার সিমান্তের খেলার সময় তিনি বাংলাদেশ দলের শেফ দ্য মিশন আশিকুর রহমান মিকু সাহেবর গাড়ী নিয়ে শপিংয়ে যান ৷ সিমান্তর স্বর্ণ জয়ের খবর তিনি শপিং থেকে এসে শোনেন৷ কোথায় ছিলেন জানতে চাইলে তিনি খেলোয়াড়দের বাথ রুমের জন্য হোটেলে গিয়েছিলেন বলে অজুহাত দেখায় ৷ উল্লেখ্য যে খেলার ভেন্যু থেকে ১৩কিঃমিঃ দুরে অবস্থিত ৷ ভেনুতেই ভিআইপি বাথ রুম ছিলো ৷ পরে জানা যায় তিনি মিথ্যা বলেছেন ৷ তার অনুপস্থিতে সিমান্তের স্বর্ণ পদক জয়ের ঐ ইভেন্টের পুরস্কার বিতরণ করেন আশিকুর রহমান মিকু ও সংগে ছিলেন উইং কমান্ডার (অব.) মহিউদ্দিন আহমেদ ৷
এই ঘটনার স্বাক্ষী :
১. আশিকুর রহমান মিকু, শেফ দ্য মিশন এসএ গেমস-২০১৬ বাংলাদেশ দল
২. বাংলাদেশ দলের সকল খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা ৷
৭. গত ২০১৫ সালে সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশীপে অংশ নেয় বাংলাদেশ ভারোত্তোলন দল ৷ থাইল্যান্ডে থাকাকালীণ সময়ে সভাপতি মহিলা রেফারী ফিরোজা পারভীন এর সংগে অশোভন এবং অনৈতিক আচরণ করেন ৷ ফলশ্রুতিতে ফিরোজা ও আরো দুজন মহিলা খেলোয়াড় সভাপতির রুমে গিয়ে এই ধরনের আচরণ না করার জন্য অনুরোধ করেন ৷
পরবর্তীতে হোটেলের লবিতে এসে সভাপতি আমাকে জানান যে, মহিলা খেলোয়াড়রা তার সাথে রুমে বিয়াদবি করেছে বলে নালিশ করেন ৷ আমি ফিরোজার কাছে জানতে চায়লে, ফিরোজা বলেন, সভাপতি গত তিনদিন যাবত্ মাঝ রাতে হোটেল রুমের দরজা নক করেন ৷ তিনি আমার খোজ করেন এবং আমাকে বলেন তার গায়ে ব্যাথা ৷ আমাকে দয়া করে বিদেশে এনেছে, যেন পাত্তা দেই ৷ এক পর্যায়ে আমার এবং মকবুলের সামনে বেয়াদব বললে ফিরোজা ক্ষিপ্ত হয়ে বলে যে, এই মিয়া আপনেরে থাপরাইছি না জুতা মারছি ? আপনে আমারে বেয়াদব কন ?
এই ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে :
১. ফিরোজা পারভীন , রেফারি ও ভারোত্তোলন খেলোয়াড় ৷
২. রোকেয়া সুলতানা সাথী (১২তম এসএ গেমসে রৌপ্য পদক প্রাপ্ত ভারোত্তোলক)
৮. এরপর ঢাকায় এসে ১২তম এসএ গেমসের ক্যাম্পে ফিরোজাকে না রাখার জন্য আমাকে বলেন সভাপতি ৷ আমি রাজি হয়নি ৷ তখন তিনি বলেন, আপনি আমার কোন কথাই শোনেন না ৷ আপনি কিভাবে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক থাকেন আমি দেখে নিবো ৷ উল্লেখ্য, ফিরোজা গত ১২তম এসএ গেমসে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করে ৷
এই ঘটনার স্বাক্ষী :
১. ফারুক আহমেদ সরকার, দলের প্রশিক্ষক
২. শাহরিয়ার সুলতানা সূচি, মহিলা দলের কোচ
৩. বিদ্যুত্ কুমার রায়, প্রশিক্ষক (জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত)
৪. মজিবুর রহমান, ক্যাম্প কমান্ডার
৯. এছাড়াও তিনি দেশে বিদেশে বিভিন্ন সময়ে আমার কাছ থেকে অনেক অর্থ ধার হিসেবে নেন ৷ তা আজও পরিশোধ করেননি ৷
এই ঘটনার স্বাক্ষী :
১. মকবুল আহমেদ খান, বর্তমান সদস্য
২. ফারুক আহমেদ সরকার, দলের প্রশিক্ষক
৩. বিদ্যুত্ কুমার রায়, প্রশিক্ষক (জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত)
৪ .আরো অনেকে ৷
উইং কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ (অব.)
সাবেক সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশন (১৯৭৬-২০১৬) ৪০বছর
ও
সাবেক পরিচালক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (১৯৯২-১৯৯৬) ৪বছর