বুধবার ● ১৫ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » ঝিনাইদহে ৩ মন্ত্রী ও ২ এমপি’র অনুষ্ঠাস্থলে পকেটমার
ঝিনাইদহে ৩ মন্ত্রী ও ২ এমপি’র অনুষ্ঠাস্থলে পকেটমার
ঝিনাইদহ (১আষাঢ় ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় দুপুর ১.৩৫মিঃ) ঝিনাইদহে তিন মন্ত্রীর অনুষ্ঠানস্থল থেকে সরকারীদলের দুই এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের মোবাইল ও নগদ টাকা পকেটমারের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে ৷ এ নিয়ে ঝিনাইদহে টক অব দি টাউনের পাশাপাশি ফেসবুকে একটি লেখা ভাইরাল হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে ৷ বাবুল আজাদ নামে আওয়ামীলীগ সমর্থিত এক ঠিকাদার তার ফেসবুকে ঝিনাইদহের দুই এমপি আব্দুল হাই ও আনোয়ারুল আজিম আনারসহ নেতাদের পকেটমারের ঘটনাটি উল্লেখ করে দিয়ে চোর ধরে পুলিশের প্রতি টাকা উদ্ধারের দাবী জানিয়েছেন৷
ফেসবুকে বাবুল আজাদ লিখেছেন “আজ ১৪ জুন বাংলাদেশ সরকারের ৩ জন মন্ত্রী মোঃ নাসিম, রশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু এসেছিলেন ঝিনাইদহ করতিপাড়া আনান্দ গোপাল গাঙ্গুলীর শোক সভায় ৷ ছবির এই স্থান থেকে আমার প্যান্টের পকেট থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পকেট মেরে নিয়েছে এবং আমাদের এম পি সাহেব মোঃ আব্দুল হাই ভায়ের মানিব্যাগ সহ টাকা ৷ কালিগঞ্জের এম পি আনার ভায়ের মোবাইল৷
শৈলকুপা দুদসর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোয়েব জর্দ্দারের উনপঞ্চাশ হাজার টাকাসহ আরো অনেকের টাকা, মানিব্যাগ ও মোবাইল পকেট মেরে নিয়েছে ৷ আমি ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ কে অনুরোধ করবো যে আপনারা সাংবাদিক ভাইদের কাছ থেকে ভিডিও ফুটেজ নিয়ে এই সব চোরদের ধরুন ৷ টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করার ব্যবস্থা করুণ”৷ বাবুল আজাদের ফেসবুকের স্ট্যাটাস নিয়ে নানা রকম রস্তাক মন্তব্যও করা হয়েছে৷
একে আজাদ নামে একজন লিখেছেন ” পকেট মারা চোরও আছে এখানে ? “৷
ডিস রতন লিখেছেন “এটাতে বিএনপি জামায়াতের হাত থাকতে পারে”৷
এমডি মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন “বাবুল ভাই আসলে বিষয়টা নৈহাটির শসানের ভৌতিক কোন ব্যপার কি না খতিয়ে দেখা উচিত্ ৷ বেতার ইসলামিক মহারাজপুর লিখেছেন “নিজের নিরাপত্তা নিজেরা দিতে পারেনা তাহলো জনগনের নিরাপত্তা কিভাবে দিবেন ?”৷
জাফর হোসাইন লিখেছেন “অসত্ ভাবে উপার্জিত টাকা এভাবে হারিয়ে যায় ভাইয়া”৷ এমডি রফিক আজাদ লিখেছেন “ডাকাতের মাল চোরে খাইছে”৷
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়ার বাসিন্দা ঠিকাদার বাবুল আজাদ নিজের ফেসবুকে পকেটমারের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ঝিনাইদহ শহর থেকে কোরাতিপাড়া পর্যন্ত নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ছিল ৷ রাস্তার দু ধারে পোশাক পরিহিত অস্ত্রধারী শত শত পুলিশ ৷ আছে সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা ৷ এর মাঝেও এমন ঘটনা ঘটবে ধারনও ছিল না ৷
তিনি জানান, দুই এমপি ছাড়াও, সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন চেয়ারম্যান, দলীয় নেতাকর্মী ও ঠিকাদারসহ অনেক নামিদামী ব্যক্তির পকেটমার হয়েছে ৷ কিন্তু লজ্জায় কেও মুখ খুলছে না ৷ তিন মন্ত্রীর সমাবেশস্থলে পকেটমারের ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুরিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ বলেন, আমি তো বিষয়টি জানি না ৷ তাছাড়া ওই অনুষ্ঠানে আমি যায়নি ৷ খোঁজ নিয়ে পরে বলতে পারবো ৷
উল্লেখ্য ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কোরতিপাড়া গ্রামে পুরোহিত আনন্দ গোপাল হত্যার প্রতিবাদে স্থানীয় স্কুল মাঠে সরকারের তিন প্রভাবশালী মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও বিমান মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন যখন পর্যায়ক্রমে যখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, তখন ঘটে বিপত্তি ৷ প্রতিবাদ সভায় পকেটমারদের বেশুমার আচরণের শিকার হন ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল হাই ৷ পকেটমার তার মানি ব্যাগসহ টাকা নেয়৷ ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের একটি মোবাইল সেট নেয় ৷
এছাড়া ঠিকাদার বাবুল আজাদের ৫০ হাজার টাকা, গান্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন, শৈলকুপার দুধসর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোয়েব জোয়ারদার, ঝিনাইদহের সাবেক এক পৌর চেয়ারম্যনসহ অর্ধশত নেতাকর্মী টাকা ও মোবাইল খোয়া যায় ৷ শত শত পুলিশ ও সাংবাদিকদের চলমান ক্যামেরার মধ্যে পকেটমারদের দৌরাত্ম্যের ঘটনায় নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ৷ তারা মোবাইল ও টাকা উদ্ধারেরও দাবী জানিছেন ৷