শনিবার ● ১৮ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » কৃষি অর্থনীতি উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন সম্ভব : সন্তু লারমা
কৃষি অর্থনীতি উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন সম্ভব : সন্তু লারমা
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (৪আষাঢ় ১৪২৩ বাংলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.১৫মিঃ) রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প কৃষি বীজ সংরক্ষন ও ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহারে প্রশিক্ষনের উদ্ধোধন কালিন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেছেন, পাহাড়ের মানুষ এখন অনিশ্চিত অবস্থায় বসবাস করছে ৷ এখানকার সাধারন প্রশাসন ও আইন-শৃংখলার ব্যবস্থা যথাযথ নয় ৷ একটা অঞ্চলের উন্নয়নের পূর্ব শর্ত হচ্ছে তার সুষ্ঠ শাসন ও আইন-শৃংখলার সুষ্ঠভাবে সংরক্ষন করা ৷ কিন্তু বর্তমানে পাহাড়ের সেই বাস্তবতা নেই৷
তিনি প্রকল্পের সার্বিক সফলতা কামনা করে বলেন, কৃষি অর্থনীতি উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন সম্ভব ৷ পার্বত্য জনপদে যারা সরাসরি কৃষি উত্পাদন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তারা এই অঙ্গের অন্র্তভূক্ত জনগোষ্ঠী ৷ এসব জনগোষ্ঠীর দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি উত্পাদন বাড়ানো সম্ভব ৷ তিনি কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নে স্ব স্ব ক্ষেত্রে ও পরিবার তথা সামাজিক উন্নয়নে পাার্বত্য চট্টগ্রামের সেই পুরনো ভোগের উত্পাদন থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক কৃষি উত্পাদনের মধ্য দিয়ে এলাকার অথনৈতিক উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ৷
১৮ জুন শনিবার রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায়ের কৃষি বীজ সংরক্ষন ও ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহারের উপর দিনব্যাপী প্রশিক্ষনের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক গেরিলা নেতা সন্তু লারমা এসব কথা বলেন ৷
শহরের আশিকা হল রুমে এগ্রেমেক-বিএনইউএফ-জুম ফাউন্ডেশন ও প্রোগ্রেসিভ কনসোর্টিয়ামের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প পরিচালক সুকৃতি রঞ্জন চাকমা ৷ বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি কর্মকর্তা তপন কান্তি পাল, প্রকল্পের রাঙামাটি উপ-প্রকল্প পরিচালক অবিরত চাকমা, বান্দরবান উপ-প্রকল্প পরিচালক যোগেশ চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা ও জুম ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সুজল কান্তি চাকমা ৷ স্বাগত বক্তব্য দেন প্রোগ্রেসিভ কনসোর্টিয়ামের নির্বাহী পরিচালক সূচরিতা চাকমা ৷
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী উপ-পরিচালক তপন কান্তি পাল বলেন, অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে কীভাবে সবজি উত্পাদন করা যায় তা কৃষকদের শিখতে হবে ৷ তাতে মানুষ রাসায়নিক মুক্ত সবজি ও ফলমূল খেতে পাবে ৷ এ প্রশিক্ষণে স্থানীয়ভাবে উন্নতমানের বীজ উত্পাদন ও সংরক্ষণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কৃষকদের প্রশিক্ষিত করে তুলবে ৷ এতে কৃষি উত্পাদন বাড়নো সম্ভব হবে ৷
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প-২য় পর্যায়-এর পরিচালক সুকৃতি রঞ্জন চাকমা বলেন, এ প্রশিক্ষণ ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে ৷ তিনি বলেন, এখানকার উপকার ভোগীদের অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বাইরে বিভিন্ন স্থানে সফরের ব্যবস্থা করা হবে ৷ পাশাপাশি বিভিন্ন স্থান থেকে প্রশিক্ষক এনেও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে ৷
দিন ব্যাপী প্রশিক্ষনে সাপছড়িসহ বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষক-কৃষানিরা অংশ নেন ৷
উল্লেখ, পার্বত্য চট্টগ্রাম পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প-২য় পর্যায়ের আওতায় ক্ষুদ্র কৃষি ব্যবসা উন্নয়ন অঙ্গ একটি অন্যতম অঙ্গ ৷ এই অঙ্গটি যৌথভাবে এগ্রোমেক ইনিশিয়েটিভ ডেভেলপমেন্ট (আদি) ফাউন্ডেশন, বনশ্রী নারী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, জুম ফাউন্ডেশন ও প্রোগ্রেসিভ কনসোর্টিয়াম মাঠ পর্যায়ে তিন পার্বত্য জেলার ৯টি উপজেলায় (রাঙামাটি : রাঙ্গামাটি সদর, কাপ্তাই ও কাউখালী, খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ি সদর, পানছড়ি ও লক্ষ্মীছড়ি এবং বান্দরবান : বান্দরবান সদর, রুমা ও রোয়াংছড়ি) বাস্তবায়ন করছে ৷ ক্ষুদ্র কৃষি ব্যবসা উন্নয়ন অঙ্গ মোট চারটি সম্ভাবনাময় উপ-খাত নিয়ে কাজ করবে ৷ উপ-খাতগুলো হচ্ছে : ১৷ সব্জি (গ্রীস্মকালীন সব্জি ও শীতকালীন সব্জি: বীজ উত্পাদন ও ফেরোমন ট্র্যাপ এর ব্যবহার), ২৷ ফলবাগান (আম, লিচু ও আমলকি), ৩৷ ঔষধি গাছ উত্পাদন, প্রাথমিক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণন এবং ৪৷ পুকুরে অথবা পার্বত্য জলাশয়ে মত্স্য চাষ ৷ উপ-খাতগুলোর আলোকে এগ্রোমেক-বিএনইউএফ-জুম ফাউন্ডেশন-প্রোগ্রেসিভ কনসোর্টিয়াম প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য কাঙ্খিত জনগোষ্ঠীর দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করবে ৷