বৃহস্পতিবার ● ২৩ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » গাজীপুরে আইনজীবি হত্যায় ৫ জনের ফাঁসি
গাজীপুরে আইনজীবি হত্যায় ৫ জনের ফাঁসি
মুহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (৯ আষাঢ় ১৪২৩ বাংলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৪৭মিঃ) গাজীপুরে ২০০৮ সালে ভাষা সৈনিক শহীদ আব্দুল জব্বারের নাতি ও শিক্ষানবিশ আইনজীবি ফিরোজ্জামান সোহেল (২৮) কে হত্যার দায়ে মা ও তিন ছেলেসহ ৫ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত ৷ একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে৷
২৩ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মোঃ ফজলে এলাহী ভূইয়া জনাকীর্ন আদালতে এ আদেশ দেন৷
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলো- গাজীপুর শহরের মধ্য ছায়াবীথি এলাকার রফিকুল ইসলামের বাড়ির ভাড়াটিয়া ও পটুয়াখালি জেলার বাউফল থানার মধ্য মদনপুরার মীরা বাড়ি এলাকার আব্দুর রউফের স্ত্রী আমেনা বেগম (৫৩), আব্দুর রউফের তিন ছেলে সজল (২৮), মোঃ তিথি (৩১) ও বাপ্পি (৩৩) এবং কাপাসিয়ার ফুলবাড়িয়া গ্রামের কফিল উদ্দিন মাস্টারের ছেলে বাদল (৪২)৷ আসামীদের মধ্যে আমেনা বেগম, সজল ও বাপ্পি পলাতক রয়েছে৷ বাকী দু’জন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিল৷
গাজীপুর আদালতের এপিপি মোঃ আতাউর রহমান জানান, ২০০৮ সালের ৯ মার্চ শিক্ষানবিশ আইনজীবী ফিরোজ্জামান ওরফে সোহেলকে দক্ষিণ ছায়াবিথী এলাকায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দা, চাপাটি, চাকু, রামদা ও বঁটি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে৷ গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে প্রথমে গাজীপুর সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে নেয়া হলে পর দিন ১০ মার্চ চিকিত্সাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান৷
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ৯ মার্চ সন্ধ্যায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে গাজীপুর শহরের দক্ষিণ ছায়াবিথী এলাকায় তিথিদের ভাড়া বাসার সামনে আসামীরা দা, চাপাতি, চাকু, বটি, ও ছোরা দিয়ে কুপিয়ে ও আঘাত করে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজীপুর শহরের রথখোলা এলাকার সোহরাব উদ্দিন ভাণ্ডারির ছেলে ফিরোজ্জামান সোহেলকে আহত করে৷
পরে গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে প্রথমে গাজীপুর সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানাধীন লাল মাটি এলাকার ইস্টার্ন হাসপিটাল এন্ড মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারে নেয়া হলে চিকিত্সাধীন অবস্থায় ওই বছরের ১০ মার্চ সকাল অনুমান ৭ টার দিকে সোহেলের মৃত্যু হয়৷
পরে এ ব্যাপারে সোহেলের পিতা বাদী হয়ে ওই বছরের ১১ মার্চ জয়দবেপুর থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন৷
পুলিশ তদন্ত শেষে ৫ জনের নামে ঐ বছরের ১০ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে৷
দীর্ঘ ৮ বছর শুনানী ও উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে পেনাল কোড ৩০২/৩৪ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক ৫ জনের ফাঁসির আদেশ এবং প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার দণ্ড প্রদান করেন৷
নিহতের বাবা ও মামলার বাদী সোহরাব উদ্দিন এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷
গাজীপুর বারের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এডভোকেট হারিজউদ্দিন আহমদ ও বাদীপক্ষের আইনজীবী মনির হোসেনও রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷
তবে বিবাদী পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আলী ও জেবুন্নেসা সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলেননি৷