সোমবার ● ১৮ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » সেবায়েত ও চিকিত্সক হত্যায় দুই শিবির নেতার স্বীকারোক্তি
সেবায়েত ও চিকিত্সক হত্যায় দুই শিবির নেতার স্বীকারোক্তি
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুপুর-কাষ্টসাগরা গ্রামের রাধা-মদন-গোপাল মঠের সেবায়েত শ্যামল নন্দ দাস ও কালীগঞ্জের শিয়া নেতা ডা: আব্দুর রাজ্জাক হত্যার দায় স্বীকার করে ১৭ জুলাই রবিবার বিকেলে পৃথক পৃথক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন দুই শিবির নেতা৷
এরা হলেন জেলার শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামের মো: আমিনুল ইসলামের ছেলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা দক্ষিন শাখার শিবিরের সাবেক সভাপতি শাহিন আলম শাহিন ও সদর উপজেলার মজারাজপুর ইউনিয়নরে হরিপুর গ্রামের মুহাম্মদ আলীর ছেলে সবুজ খান৷
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন এসপি মো: আলতাফ হোসেন৷ তিনি জানিয়েছেন আদালতে আসামীরা হত্যার দায় স্বীকার করেছে এবং সহযোগিদের নাম প্রকাশ করেছেন৷
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আজবাহার আলী শেখ, সার্কেল এএসপি গোপিনাথ কানজি লাল, কালীগঞ্জের ওসি আমিনুল ইসলামসহ পদস্থরা উপস্থিত ছিলেন৷
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এ হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে শিবির৷ তেমনটিই জবান বন্দিতে ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় নির্দেশে এ দুইটি হত্যার ঘটনা ঘটনানো হয়েছে বলে জানিয়েছে শাহিন আলম শাহিন ও সবুজ খান৷
তারা বলেছেন গত ১৪ মার্চ রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার শহরের নিমতলা বাস স্ট্যান্ডের কাছে হোমিও ডাক্তার এলাকার শিয়া নেতা হাফেজ আব্দুর রাজ্জাককে খুন করে৷ এ ঘটনায় কালীগঞ্জ উপজেলা শিবিরের ৮জন অংশ নেয়৷ সে আদালতে এ খুনে সাথে জড়িত আরো ৭ জনের নাম প্রকাশ করেছে ৷ তার দেয়া জবানবন্দি রেকর্ড করেন কালীগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জেষ্ঠ্য বিচারিক হাকিম মো: আলমগীর কবীর৷
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান অপর চাঞ্চল্যকর ঘটনা জুলাই মাসের পহেলা তারিখে ঘটে৷ এদিন সদর উপজেলার মধুপুর-কাষ্টসাগরা গ্রামের রাধা-মদন-গোপাল মঠের সেবায়েত শ্যামা নন্দ দাসকে খুন করা হয়৷ এ ঘটনায় শিবির নেতা মো: আমিনুল ইসলাম এ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে বলেছেন, গত ৩০ জুন দিবাগত ভোর রাতে কেন্দ্রীয় নির্দেশে শ্যামানন্দ দাসকে খুন করা হয় ৷ এ খুনের ঘটনায় তার সঙ্গে অংশ নেয় আরো ৬ জন ৷ তাদের নামও সে আদালতে বলেছেন৷
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ফাহমিদা জাহাঙ্গীর তার দেয়া জবানবন্দি লিপি বদ্ধ করেন বলে জানানো হয় ৷ জবান বন্দিতে সে উল্লেখ করেছে কিভাবে খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে তারা ৷ আদালতে দেয়া জবান বন্দিতে সে খুনের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান এসপি ৷ শনিবার ১৬ জুলাই রাত ৩টার দিকে শৈলকুপা উপজেলা শেখপাড়ার একটি মসজিদ থেকে শাহিনকে ও কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের ৩ নং ওয়ার্ডের সেক্রেটারিকে সবুজ খানকে ধরা একই দিন বিকেল ৩ টার দিকে ৷
এমন তথ্য দিয়েছে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার৷ পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো জানিয়েছেন তাদের রবিবার বিকেল ৪টার দিকে সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করা হয় এবং সন্ধ্যা ৬টার দিকে জবান বন্দি প্রদান করা শেষ করা হয় ৷
প্রসঙ্গত: গত ৭ জুন নিহত সদর উপজেলার কোরতিপাড়ার পুরোহিত আনন্দ গোপাল হ্ত্যার দায় স্বীকার করে গত ২১ জুন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবান বন্দি প্রদান করে অপর শিবির নেতা এনামুল ৷ এই নিয়ে চাঞ্চল্যকর তিন হত্যা মামলার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করলো পুলিশ৷