মঙ্গলবার ● ১৯ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » গাজিপুর » গাজীপুরে শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
গাজীপুরে শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (৪শ্রাবণ ১৪২৩ বাংলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৪৫মিঃ) শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে৷
এ উপলক্ষে গাজীপুর সদর উপজেলার পিরম্নজালী গ্রামে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি৷ জনপ্রিয় লেখকের নিজহাতে গড়া পিরুজালী গ্রামের নুহাশপল্লীতে কবর জিয়ারত, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং এতিমদের ভোজের আয়োজন করা হয়েছে৷
১৯ জুলাই মঙ্গলবার সকালে কবর জিয়ারতে আসেন হুমায়ূন আহমেদের দুই ভাই লেখক জাফর ইকবাল ও কার্টুনিষ্ট আহসান হাবিবসহ পরিবারের লোকজন৷ তারা কবরের পাশে দাঁড়িয়ে মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন৷
লেখালেখি নিয়ে পারিবারিকভাবে একটি জাদুঘর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে আহসান হাবিব সাংবাদিকদের জানান, হুমায়ূনের প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত সব স্মৃতি এখানে সংরক্ষণ করা হবে৷
এ সময় জাফর ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘হুমায়ূনের শূন্যতা আমরা সব সময় অনুভব করি৷ তবে হুমায়ূন তার লেখা উপন্যাস, নাটক ও কর্মের মাধ্যমে এদেশের মানুষের মনে বেঁচে থাকবেন৷’
সকাল ১০টার দিকে দুই শিশুপুত্র নিষাদ ও নিনিদকে নিয়ে কবর জিয়ারতে আসেন লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন৷ তিনি কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং প্রয়াত লেখকের আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করেন৷
মেহের আফরোজ শাওন সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি, দেশের ওপর যে ধরনের আঘাত এসছে, আমার মনে হয় হুমায়ূন আহমেদ এজন্য কষ্ট পাচ্ছেন৷ আমরা দেখেছি দেশের ওপর আঘাত আসলে বরাবরই লেখনীর মাধ্যমে সোচ্চার ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ৷ তিনি চাইতেন দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি ৷’
এছাড়া মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন সিঙ্গাপুর থেকে আনা মেটালের তৈরি ‘উপুড় হয়ে শুয়ে বই পাঠরত এক নারীর মূর্তি’ নুহাশ পল্লীতে স্থাপন করবেন বলে কথা রয়েছে৷
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ১৮ জুলাই সোমবার রাতেই শাওন দুই ছেলে নিশাদ ও নিনিদসহ নুহাশপল্লীতে এসে অবস্থান করেন৷
দুপুরে কোরআনখানি ও এতিমদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল৷ তিনি বলেন, আশপাশের মাদরাসা ও এতিমখানা থেকে তিন শতাধিক এতিমকে সাথে নিয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়েছে৷ পরে তাদের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷
প্রিয় লেখককে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন শত শত ভক্ত আর অনুরাগী৷ অনেকে হলুদ পাঞ্জাবি পড়ে হিমু সেজে এসেছেন কবর জিয়ারতে৷ নারী, পুরুষ ও শিশুদের ফুলেল ভালোবাসা ও বিচরণে সিক্ত লেখকের প্রিয় নুহাশপল্লীর প্রাঙ্গন৷
প্রসঙ্গত, হুমায়ূন আহমেদ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান৷ ২৪ জুলাই তার লাশ নিজের গড়া নুহাশ পল্লীর লিচুতলায় দাফন করা হয়৷ জনপ্রিয় এই লেখক ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন৷ তার প্রথম উপন্যাস নন্দিত নরক৷ এরপর প্রায় তিনশত উপন্যাস লিখেছেন তিনি৷ এছাড়া সিনেমা, নাটক ও টেলিফিল্ম রচনা করে বিখ্যাত ছিলেন তিনি৷ ব্যক্তি জীবনের তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক৷