বৃহস্পতিবার ● ২১ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রকৃতি ও পরিবেশ » সিরাজগঞ্জে পানিবন্দী হাজারো মানুষ
সিরাজগঞ্জে পানিবন্দী হাজারো মানুষ
সোহেল রানা, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :: (৬শ্রাবণ ১৪২৩ বাংলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.০২মিঃ) উজান থেকে পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষন যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিরাজগঞ্জ জেলার চরাঞ্চলের ২৪টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে ৷ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ৷ এর মধ্যে সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের ২৫টি গ্রামই বন্যায় নিমজ্জিত হয়ে মানুষগুলো দুর্বিসহ অবস্থায় পড়েছে৷ অপরদিকে, পানি বাড়ার সাথে সাথে চৌহালীর এনায়েতপুরে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে৷
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার ৮৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ২৪টি ইউনিয়ন মধ্য যমুনায় চরাঞ্চলে অবস্থিত ৷ পানি বাড়ার সাথে এসব অঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে৷ ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে৷ চরাঞ্চলের রাস্তাঘট তলিয়ে গেছে৷ বসতবাড়ী ও বাড়ীর চারপাশে পানি ওঠায় মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে৷ দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট৷ অধিকাংশ স্কুলগুলোতে পানি ওঠায় ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা বিঘ্ন ঘটছে৷ কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে যাতায়াতে কষ্ট হয়ে পড়েছে৷ বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ী বাড়ী থেকে নৌকা যোগে ছাত্র-ছাত্রীরা এক পাড়া থেকে অন্যপাড়ায় যেতে হচ্ছে৷
সয়াশেখা স্কুলের ৫ম শ্রেনীর সুমন জানায়, বড় কয়ড়া থেকে সয়াশেখা নৌকাযোগে স্কুলে আসতে হয়েছে৷ অনেক সময় বৃষ্টি নামলে বই খাতা ভিজে যায়৷ তারপরেও কষ্ট করে স্কুল এসেছি৷ এছাড়াও পানি বাড়ার সাথে সাথে চৌহালীর উপজেলার এনায়েতপুরে নদীর তীরবর্তী বামন গ্রামে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে৷ গত কয়েকদিনের প্রায় শতাধিক বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে৷
কাওয়াকোলা ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম জানান, ৭নং ওয়ার্ডে বর্নি, বড় কয়ড়া ও ছোট কয়ড়া তিনটি গ্রামই বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে৷ এক বাড়ী থেকে অন্য বাড়ীতে যাতায়াত অসাধ্য হয়ে পড়েছে৷ দরিদ্র এসব মানুষের নৌকাও নেই৷ এঅবস্থায় মানুষগুলো দুর্বিসহভাবে জীবনযাপন করছে৷
কাওয়াকোলা ইউপি চেয়ারম্যান টি.এম. শাহাদত হোসেন বলেন, ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামই বন্যায় নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে৷ নৌকা ছাড়া কেউ ঘর হতে বের হতে পারে না৷ সকল রাসত্মাঘাট-ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে গেছে৷ কৃষকরা চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে৷ দিনমজুর মানুষগুলোর চরম দুরাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে৷ এখনও সরকারী সহায়তা পাওয়া যায়নি৷ উপজেলা পরিষদের নির্দেশনা অনুযায়ী তালিকা তৈরীর কাজ চলছে৷
উপজেলা প্রকল্প বাসত্মবায়ন কর্মকর্তা শাহজাহান আলী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিদর্শন করা হয়েছে৷ এতে এ ইউপির ৮০ভাগ মানুষ পানি বন্দী রয়েছে৷ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে৷ ইউপি চেয়ারম্যানকে তালিকা তৈরীর নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ তালিকা জমা দেবার পরই সরকারী সহায়তা প্রদান করা হবে৷
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইমাম জানান, গত ১২ ঘন্টায় ৫ সে.মি পানি বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ১২.৯৬ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে৷ এখনও বিপদসীমার ৪১ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে৷