রবিবার ● ৩১ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » জনদুর্ভোগ » শিক্ষা স্বাস্থ্য ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত কৈঢোপ আবাসনবাসী
শিক্ষা স্বাস্থ্য ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত কৈঢোপ আবাসনবাসী
বগুড়া প্রতিনিধি ::বগুড়া গাবতলীর ১নং কাগইল ইউনিয়নের ‘কৈঢোপ আবাসন প্রকল্প’র ৭০পরিবার বসবাস করলেও এখন তাঁরা শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ায় মানবেতর ভাবে জীবন যাপন করছে৷
জানা যায়, আবাসন প্রকল্প উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে এখানে যেন সমস্যার অনত্ম নেই৷ প্রায় ২শতাধিক শিক্ষার্থীদের জন্য নেই কোন স্কুল৷ নামাজ পড়ার মসজিদ, দাফনের জন্য নেই কোন কবর স্থান৷ ভূমিহীন পরিবারগুলোর মাঝে আর্থিক ভাবে উন্নয়ন ও স্বাবলম্বী করার লক্ষে মাছ চাষ করার জন্য গাবতলী উপজেলা সমবায় অধিদপ্তর ঋণ প্রদান করেছেন৷ এ ঋণ নিয়ে অনেক পরিবার এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন৷ তাঁরা ক্ষুদ্র ও কুটির হস্ত শিল্পের কাজ সেলাই, দিনমজুরী ও ভ্যান-রিক্সা চালিয়ে পরিবারের মুখে জুটাচ্ছেন ডাল ভাত৷ তবুও তাদের পাশে যেন কেউ নেই৷ অসহায় কৈঢোপ আবাসনবাসী চায় শিশুদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, খাদ্য, বস্ত্র ও চিকিত্সা সেবা’সহ নাগরিক অধিকার৷
সরকার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে স্যানেটারি ল্যাট্রিন, গভীর নলকুপ স্থাপন করা হলে আজও তা অনেকটা পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে৷ উঠছে না নলকুপ দিয়ে পানি৷ সংস্কার কাজ না করায় ২টি ব্যাকে ৭০টি ঘরের বেহাল দশা৷ বসবাসে অনুপযোগী হওয়ায় অনেকে আবাসন ছেড়ে চলে যেতে বাঁধ্য হয়েছেন৷ ঘরের টিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি পড়ছে৷ গভীর নলকূলগুলো বিকল, টয়লেটগুলো ভেঙ্গে গেছে৷ অফিস ঘর থাকলেও চলছে না কোন কার্যক্রম৷ এবছরে ৭০টি পরিবারে বিদু্যত্তের আলো জ্ব্বালিয়ে দিলেও স্কুল না থাকায় ২শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া চরমভাবে বিঘি্নত হচ্ছে৷ মসজিদ না থাকায় ৩০জন বৃদ্ধের নামাজ পড়াসহ নানা ভোগানত্মি পোহাতে হচ্ছে৷ সবকিছু মিলে মনে হয় যেন অসহায় মানুষের এক দুর্বিসহ জীবনযাপন৷ আবাসন প্রকল্প সমবায় সমিতি লিঃ সভাপতি ঠান্ডু মিয়া জানান, সরকারের সু-দৃষ্টি না থাকায় আমাদের কে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে৷ বহু কষ্ট করে মত্স্য, শাক-সবজি চাষ, গরম্ন, ছাগল, হাঁস-মুরগি, কুবতর পালনসহ মজুরী’র কাজ করে দিনযাপন করছি৷ সাধারন সম্পাদক বজলুর রহমান জানান, স্কুল না থাকায় শিৰার আলো ছড়িয়ে পড়ছে না৷ ফলে অসময়ে ঝড়ে পড়ছে অনেক শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী৷ তাঁত শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে৷ আবাসনে বসবাসরত রফিকুল ও জুয়েল জানান, এখানে মসজিদ ও কবর স্থান না থাকায় আবাসনের মৃতু্য কুদ্দুস, হামিদুন, মোশারফ, বাদশা, নজরুল, টুকু, কান্টুকে অন্যত্রে দাফন সম্পূর্ণ করতে হয়েছে৷ এরপরও নেই স্বাস্থ্য ও শিক্ষার কোন আলো৷ পুকুর পাড়ে ঘাট নেই, স্কুল নেই, কবর স্থান’সহ মসজিদ নেই৷ এসব সমস্যার জন্য দ্রম্নত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হসত্মৰেপ কামনা করেছেন দিনমজুর বাদল, খলিল, ফটু, আছমা’সহ শতাধিক নারী-পুরম্নষ৷এবিষয়ে গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাঃ আহসান হাবিব জানান, সমস্যা’র জন্য কোন লিখিত আবেদন পাইনি৷ তবে আবেদন পেলে অবশ্যই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ কাগইল ইউপি’র নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ আগানিহাল বিন জলিল তপন জানান, কৈঢোপ আবাসনের বর্তমান অবস্থা খুব খারাপ৷ তবে সকল সমস্যার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবগত করেছি৷ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোছাঃ সাবিহা আফরুজ জানান, আমাদের সমবায় অধিদপ্তর থেকে আবাসনবাসীর কল্যাণে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা হয়েছে৷ উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় কৈঢোপ আবাসনে কবর স্থান নির্মান বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে৷ আশাকরছি ইউএনও দদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করিবেন৷ তবে ‘কৈঢোপ আবাসন প্রকল্প’ পরিবারের সদস্যদের উন্নয়নে সমবায় দপ্তরের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে৷ ফলে নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত আবাসনবাসী নিরাপত্তা ও সু-শাসনসহ আইনী সহযোগিতা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন৷